
দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্বাচিত সরকার অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি সরকারের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন।
রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত সমাবেশে দুদু এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, “হাসিনাতন্ত্রের পতন হয়েছে প্রায় এক বছরের অধিক কাল। কিন্তু প্রত্যাশিত গণতন্ত্রে উত্তরণের যে বিষয়টি ছিল সেটি এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়নি। আমরা ১৫ থেকে ১৬ বছরে তিনটি নির্বাচন দেখেছি। তৎকালীন দাবিদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছাধীনে তার নির্বাচন কমিশনে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যে নির্বাচন কোনোভাবেই গণতন্ত্রের পক্ষে তো যায়নি, বরঞ্চ গণতন্ত্র বিনাশে ভূমিকায় পালন করেছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, মানুষ ভোট দিতে আগ্রহী হলেও, এক বছর পেরিয়ে গেলেও সরকার নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। “স্বৈরাচারের পতনের পর মানুষ তার পছন্দের প্রার্থী, মার্কা এবং দলের পক্ষে ভোট দিতে চায়। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয়, সরকার তার একবছরের অধিক কাল এই দায়িত্বটি এখনো পালন করতে পারেনি।”
নির্বাচনের আগে বিভিন্ন মহলের দাবিগুলোকে সমালোচনা করে দুদু বলেন, “আবার কোনো কোনো মহল নানান বক্তব্য এবং কর্মসূচি দিয়ে; সেটি আগে সম্পূর্ণ করতে হবে এই দাবি দিয়ে নির্বাচনের বিরোধিতা করছে।”
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হিসেবে তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু কিছু রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার পর কখনো জাতীয় সংসদে একটা সিটও পায়নি। এখন তারাও বলছে, তাদের মতো করে সরকারকে কাজ করতে হবে। এটা হাস্যকর। এটা চাপিয়ে দেয়ার মত একটা ঘটনা।”
ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পুনরাবৃত্তি করে দুদু বলেন, “আমি মনে করি, সরকারের উচিত হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে যে নির্বাচনের কথা বলেছে, যে রোডম্যাপ সরকার দিয়েছে, সে অনুযায়ী নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। সেই নির্বাচন হলে আমি মনে করি বাংলাদেশের সব থেকে বেশি আন্দোলন, হাসিনাবিরোধী যে ভূমিকা পালন করেছে যে দল সেটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। তার সাথে অন্যান্য দলও ভূমিকা পালন করেছে। আগামী দিনে নির্বাচন হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ধানের শীষ এবং বিএনপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।”
বিএনপি নির্বাচিত হলে দেশের পরিস্থিতি কেমন হবে, তা তুলে ধরে সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, “বিএনপি যদি জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ এবং তার সাথে যারা ঘনিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর সাথে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। গণতন্ত্র উত্তরণ হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা পাবে এবং হাসিনার বিচার আরো বেশি ত্বরান্বিত হবে। বিদেশে যে টাকা পাচার করা হয়েছে, তা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। এই ভূমিকাগুলো একমাত্র পালন করতে পারে নির্বাচিত সরকার।”
সমাবেশে জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনসহ সংগঠনটির অন্যান্য নেতাকর্মীরা।