
পিরোজপুরে যুব সমাবেশে নেতৃস্থানীয় বক্তব্যে সদর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের প্রধান অতিথি মাসুদ সাঈদী সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, ডাকসু, জাকসুতে দেখলাম আমাদের কিছু বন্ধু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। আমরা বলতে চাই, নির্বাচন বর্জন না করে নিজেদের খারাপ আচরণগুলো বর্জন করুন। জনগণের কাছে যান, জনগণের ভালোবাসা পেতে চেষ্টা করুন। জনগণ কি চায় তা বোঝার চেষ্টা করুন। তাহলে আর ভোট বর্জন করতে হবে না।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে ক্ষমতায় যারা এসেছে, তারা অধিকাংশই চেয়ারটিকে পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে দেখেছে। দেশ বা জনগণের উন্নয়নের চিন্তা করা হয়নি, বরং সম্পদ বিদেশে পাচার ও বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিও জানান, পিআর পদ্ধতি একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। কিন্তু যারা কালো টাকায় নির্বাচন করে এবং মনোনয়ন বাণিজ্য করে, তারাই কেবল পিআর পদ্ধতির বিরোধিতা করে।
মাসুদ সাঈদী আরও বলেন, ২০২৬ সালের নির্বাচন অতীতের সব নির্বাচনের সঙ্গে তুলনীয় নয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন একটি নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে। নিবন্ধিত অনেক ইসলামী দল মিলে একটি নতুন মোর্চা তৈরি করেছে। ৫৪ বছরে আপনারা অনেক দল ও মার্কা দেখেছেন। এবার ইসলামী দলসমূহের মনোনীত প্রার্থীদের সবাই ভোট দিবেন।
তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক হানাহানি করি না। বিভেদের রাজনীতি করি না। আমাদের রাজনীতি উন্নয়নের, আমাদের রাজনীতি ভালোবাসা ও সৌহার্দ্যের। ৫৪ বছরে দেশের যে উন্নয়ন হবার কথা ছিল, তা হয়নি। দেশের অর্ধেকের বেশি জনগোষ্ঠী এখনও দারিদ্র সীমার নিচে বাস করছে। শিক্ষার হার শতভাগ হয়নি। আমরা দুর্নীতি মুক্ত, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাই। আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ চাই।
মাসুদ সাঈদী বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, কিছুদিন আগে পিরোজপুরে একটি দলের সদর উপজেলার কাউন্সিল অধিবেশনে তারা নিজেরাই ব্যালট বাক্স ছিনতাই করেছে। যাদের কাছে নিজের দলের কাউন্সিলের ব্যালট নিরাপদ নয়, তাদের কাছে জাতীয় নির্বাচনের ব্যালট কিভাবে নিরাপদ থাকবে? তাই জনগণের আস্থা জামায়াতে ইসলামীর প্রতি রয়েছে। আমাদের মাঝে কোনো কোন্দল নেই, কোনো দুর্নীতি নেই।
তিনি তার পিতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর উদাহরণ টেনে বলেন, আমার পিতা দুর্নীতিবাজ ছিলেন না। তার সন্তানরাও দুর্নীতিবাজ নয়। প্রমাণ হিসেবে আমার পিতা দুইবার পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন, আমি জিয়ানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমাদের বিরুদ্ধে কেউ এক টাকার দুর্নীতির অভিযোগও আনতে পারেনি।
যুব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সদর ইউনিয়ন যুব বিভাগের সভাপতি ফেরদাউস হোসেন সোহাগ এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি আহাদুল ইসলাম নাঈম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জিয়ানগর উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আলী হোসেন, সেক্রেটারি তৌহিদুর রহমান রাতুল, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল হাই, সদর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা খাইরুল বাশার, উপজেলা বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা কবির হোসেন সহ জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।