
দূরত্ব যতই প্রশস্ত হোক, বাধা নেমে আসলে তাদের থামানো হবে না—এমন দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও ড্রিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের ‘মিডিয়া ফ্লোটিলা’ অভিযানে অংশ নিয়ে একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, তাদের লক্ষ্য স্পষ্ট: অবরোধ ভাঙা এবং গাজা পৌঁছানো।
ভিডিওতে শহিদুল আলম বলেন, তারা এখন ফিলিস্তিনি টাইম জোনে অবস্থান করছে এবং ফ্লোটিলার অন্যান্য কিছু জাহাজ ইতিমধ্যেই আটক হওয়ার খবর তাদের কাছে এসেছে। তিনি জানান, “আমাদেরটা সবচেয়ে বড় জাহাজ। আমাদের সঙ্গে আরও আটটি ছোট নৌকা পাড়ি দিয়েছিল। আমরাসহ এই মুহূর্তে এই নয়টি যানবাহন মুক্ত আছে। আমরা আজ ফিলিস্তিনি টাইম জোনে এসেছি। এখনো দূরত্ব আছে। তবে আজ আমরা এই আটটি ছোট নৌকাকে পার হয়ে যাব। এরপর থেকে আমাদের এই জাহাজটিই সবচেয়ে আগে থাকবে। এতে বোঝাই যাচ্ছে, আক্রোশটা আমাদের ওপরই পড়বে। কিন্তু আমরা একেবারেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, আমরা একেবারে গাজা পর্যন্ত যাব এবং কোনো বাধাই গ্রহণ করব না।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, তাদের উদ্দেশ্য ত্রাণ পৌছে দেওয়া নয়—এরা অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যে যাচ্ছে। ভিডিও বার্তায় শহিদুল আলম বলেন, “ত্রাণ নয়, অবরোধ ভাঙার উদ্দেশ্য নিয়ে গাজার দিকে যাচ্ছেন”—এ কথা তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন।
শহিদুল আলম আরও জানান, জাহাজটিতে মোট ৯৬ জন আছেন; তাদের মধ্যে ৮২ জন রয়েছে গণমাধ্যম ও চিকিৎসা পেশাজীবী হিসেবে। এছাড়া সংগঠক, ফ্লোটিলা কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য ও ক্রুদেরাও রয়েছেন।
ভিডিও বার্তায় তিনি জাতিসংঘের আশঙ্কা ও সাম্প্রতিক ঘটনার প্রসঙ্গ এনে বলেন, গত রাতে মেডিসিনস সান ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ)-এর ১৪ জন চিকিৎসক নিহত হয়েছেন; এ নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া পর্যাপ্ত নয় বলে তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। শহিদুল আলম বলেন, রাজনৈতিক নেতারা বহু ক্ষেত্রে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে—তাই নাগরিকদের মাঠে নামার সময় এসেছে।
বার্তার শেষভাগে ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, “আমরা জয়ী হব, ফিলিস্তিন মুক্ত হবে”।
চলমান অভিযানের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল ইতিমধ্যেই ‘সুমুদ ফ্লোটিলা’ অংশের বেশ কিছু জাহাজ আটক করে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে; যদিও শহিদুল জানিয়েছিলেন, তাদের জাহাজ ও সঙ্গে থাকা আটটি নৌকা এখনও মুক্ত। তারা সামনে থেকে এগোবে—তিনি এ কথা বারবার বলেছেন এবং বাধা সত্ত্বেও গাজা পৌঁছানোর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।