
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেছেন, ‘সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেখ হাসিনা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা বাধাগ্রস্ত করেছে। এ কারণে ১৩ বছর পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকার আসার পর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ মামলাটি তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন করেছে। আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের কথা রয়েছে। টাস্কফোর্সে যারা রয়েছেন, তারা মামলার বাদী, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তদন্তে অনেকদূর এগিয়ে গেছেন। তদন্ত কমিটির সংশ্লিষ্টরা আমাদের জানিয়েছেন, আগের সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তদন্তে বাধা দেওয়া হতো। এ কারণে তদন্ত আগায়নি।’
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় মামলার বাদী নওশের রোমান, সাগর-রুনির ছেলে মাহির সারওয়ার মেঘ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৭ অক্টোবর হাইকোর্টের নির্দেশে সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদমর্যাদার নিচে নয় পুলিশের একজন প্রতিনিধি, সিআইডির একজন প্রতিনিধি ও র্যাবের একজন প্রতিনিধিকে রাখা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগ থেকে টাস্কফোর্স গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তাদের ৬ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত থেকে র্যাবকে সরিয়ে দেওয়ারও আদেশ দেন আদালত।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। বিভিন্ন বাহিনীর অভিজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন করতে বলা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। মামলার বাদীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ও রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ শুনানি করেন।
এর আগে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত থেকে র্যাবকে সরিয়ে দিতে সম্পূরক আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয়।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন।