
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের সপ্তম দিন চলছে।
রবিবার (২৪ আগস্ট) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ এদিনের কার্যক্রম শুরু হয়।
এর আগে গত ৩ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম দিনে সাক্ষ্য দেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ। পরদিন ৪ আগস্ট সাক্ষ্য দেন পঙ্গুত্ব বরণ করা শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও চোখ হারানো দিনমজুর পারভীন। এরপর ৬ আগস্ট প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে হাজির হন রিনা মুর্মু ও সাংবাদিক একেএম মঈনুল হক।
গত ১৭ আগস্ট চতুর্থ দফায় সাক্ষ্য দেন চারজন— সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার এবং শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম। পরবর্তীতে ১৮ আগস্ট সাক্ষী হিসেবে হাজির হন শহীদ আস-সাবুরের বাবা মো. এনাব নাজেজ জাকি, শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল ও রাজশাহীর প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন। এদের জেরা করেন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
ষষ্ঠ দিনে, অর্থাৎ গত ২০ আগস্ট, আরও চারজন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, একই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ পারভীন, ইবনে সিনা হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাসানুল বান্না এবং শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের মা সোনিয়া জামাল।
এ পর্যন্ত মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন আসামি। এর মধ্যে মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন, অন্যরা পলাতক রয়েছেন। তবে আজ সকালেই পুলিশ প্রিজনভ্যানে করে সাবেক আইজিপি মামুনকে আদালতে হাজির করে।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। প্রসিকিউশন মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনেছে। অভিযোগপত্রের মোট পৃষ্ঠাসংখ্যা ৮ হাজার ৭৪৭। এর মধ্যে তথ্যসূত্র রয়েছে ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠায়, জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণ ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠায় এবং শহীদদের তালিকার বর্ণনা রয়েছে ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠায়। মামলায় মোট সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত আছেন ৮১ জন।