
বাংলাদেশ জাতি হিসেবে আজ যে বিভক্ত অবস্থায় রয়েছে, তার অন্যতম কারণ ১৯৭১ সালের গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের সঠিক বিচার না হওয়া এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। শনিবার (১৯ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ইশরাক বলেন, ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সময় ছিল ১৯৭১ সাল, যেখানে ব্যাপক মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়। কিন্তু সেইসব অপরাধের বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে। শেখ হাসিনা এই বিচারকে প্রতিপক্ষকে দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন, ফলে বিচার প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ হয়নি। তিনি মনে করেন, যদি সেই সময়ে শহীদদের রক্ত এবং নির্যাতিত নারীদের সম্ভ্রমের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হতো, আজ জাতি এতটা দ্বিধাবিভক্ত হতো না।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এত বছর পরও দেখা যায়, যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক ব্যক্তি ও তাদের উত্তরসূরিরা বরং গর্ব করে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগিতাকে যৌক্তিক বলে দাবি করছে। এটা আমাদের জাতিগত দুর্ভাগ্যের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ।
ইশরাক আরও বলেন, আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো তখনই দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ করতে পারে, যখন একটি জাতি নিজেদের ভেতর ঐক্য হারায়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা যদি আমাদের অগ্রাধিকারগুলো স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে পারতাম, তাহলে এই বিভাজন শত বছরেও আসত না।
রাজনীতিতে সমসাময়িক দলগুলোর অবস্থান নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি। তার মতে, নতুন ও পুরনো রাজনৈতিক দলগুলো এখনো আওয়ামী লীগের পুরনো কৌশল অনুকরণ করছে এবং আন্দোলনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ও ত্যাগকে ছিনতাই করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। তিনি দাবি করেন, জনগণের অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটলেও, সেই আন্দোলনের চেতনা ও আবেগ পরবর্তীতে কিছু ‘সমন্বয়কারী’, ‘উপদেষ্টা’ এবং এনসিপির নেতাদের হাতে বিক্রি হয়ে গেছে।
ইশরাক স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা কোনো পরাশক্তির পিন্ডি, দিল্লি কিংবা আমেরিকা-রাশিয়া-চীনের অনুগত হব না। যারা দালালি করে সুবিধা নেয়, তারা দেশ ও জাতির শত্রু।” তিনি প্রত্যাশা করেন, এসব অন্যায়ের বিচার যদি না হয় এই পৃথিবীতে, তবে অন্তত পরকালে তা হবেই।