মেহেরপুরে শিশু ধর্ষণ মামলার আসামির পক্ষে এসআই, থানা ঘেরাও
- মেহেরপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১১:৩৩ এম, ১৪ মার্চ ২০২৫

মেহেরপুরে শিশু ধর্ষণ মামলার আসামির পক্ষ নিয়ে বাদীকে হুমকির প্রতিবাদে সদর থানা ঘেরাও করেছেন ছাত্রজনতা।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
ছাত্রজনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক উপপরিদর্শক (এসআই) সুজয় কুমারকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার।
জানা গেছে, সদর উপজেলার একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারী ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে মদনাডাঙ্গা গ্রামের বায়েজিদ নামের এক যুবক। ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে বায়েজিদের সঙ্গী আলামিন হোসনে। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে গেল ৯ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ, আলামিন ও বরকতের নামে মেহেরপুর আদালতে মামলা করেন। আসামিরা গ্রেফতার হয়ে কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হন।
এরপর ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার চাপ দেন। এ ঘটনায় মামলার বাদী প্রতিকার চেয়ে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর থানার এসআই সুজয় কুমার উভয় পক্ষকে নিয়ে থানায় বসেন। এ সময় এসআই সুজয় কুমার ধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষ থেকে বাদীকে চাপ দিতে থাকেন। খবর পেয়ে থানায় গিয়ে প্রতিবাদ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী তুষার ও সিয়াম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুজয় কুমার থানার মধ্যেই তুষার ও সিয়ামকে লাঠিপেটা করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রজনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ করেন।
সুজয় কুমার ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে থানা ও থানার আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন ছাত্রজনতা।
এদিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সেনাবাহিনীর একটি দল থানায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তারও ঘটনাস্থলে আসেন।
এ সময় বিক্ষুদ্ধ ছাত্রজনতা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিয়ে পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তারের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন। তবে শেষ পর্যন্ত ছাত্ররা তিনটি শর্তের মধ্যে এক ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে রাত সাড়ে দশটার দিকে থানা চত্বর থেকে বের হয়ে বাইরে অবস্থান নেয়।
শর্ত তিনটি হলো এক ঘণ্টার মধ্যে এসআই সুজয় কুমারকে বরখাস্ত, বাদীকে হুমকি দেয়ায় ধর্ষণ মামলার আসামি ও তাদের পক্ষের লোকজনকে দ্রুত গ্রেফতার এবং আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীন জানান, এসআই সুজয় কুমারকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। থানায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত শান্ত রয়েছে।