
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেছেন, আজকের দিনে এত মায়ের কোল সন্তানহারা হয়েছে, এত মানুষ অন্ধত্বের শিকার হয়েছে- এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, “আমাদের মৌলিক দাবিগুলো ছিল- দেশে মৌলিক সংস্কার হবে, টাকা পাচারকারীদের দৃশ্যমান বিচার হবে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হবে। কিন্তু একশ্রেণির ক্ষমতালোভীরা সংস্কার ও বিচারকে উপেক্ষা করে শুধু ক্ষমতায় যেতে চায়। তারা শুধু পাগল নয়, ‘ডাবল পাগল’ হয়ে গেছে।”
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ্ ময়দানে অনুষ্ঠিত আট দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মুফতি রেজাউল করিম বলেন, “আপনারা মনে করেছিলেন ক্ষমতায় যাবেন, সেদিন ভুলে যান। বাংলাদেশকে যারা ভালোবাসে, ইসলামকে যারা ভালোবাসে, মানবতার কল্যাণে যারা কাজ করে, তারা আজ রাজপথে নেমেছে।”
তিনি আরও বলেন, রাজনীতি করার মূল উদ্দেশ্য হলো ইসলাম, দেশ ও মানবতার কল্যাণ। “আমরা শুধু ব্যক্তিগত বা দলগত স্বার্থের জন্য রাজনীতি করি না, আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য আল্লাহর হুকুম পালন। ৫৩ বছর স্বাধীনতার পর আল্লাহর প্রদত্ত সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের কলঙ্কজনক ইতিহাস লিখবে।”
আবু সাঈদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে মুফতি রেজাউল করিম বলেন, “আমি এখনো চোখে দেখি আবু সাঈদের দুই হাত প্রসারিত করার দৃশ্য। বৈষম্য দূর করতে, জালেমদের হাত থেকে দেশ রক্ষার জন্য সে জীবন দিয়েছে। সেই প্রেরণায় জানের ভয় না করে রাস্তায় নেমেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ আমাদের বিজয় দান করেছেন।”
তিনি প্রেরণাস্বরূপ বলেন, “আজকের হাজার হাজার হাফেজ, আলেম ছাত্র, ছোট মায়ের কোলের সন্তান- তাদের জীবন দেওয়া শুধু একজনকে নামিয়ে আরেকজনকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। তারা জীবন দিয়েছে দেশের স্বাধীনতা, ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ, খুনিদের হাত থেকে দেশ রক্ষার জন্য এবং যারা বিদেশিদের সাহায্য করে আমাদের অবহেলা করেছে, তাদের উৎখাত করে দেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করানোর জন্য।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সালাহউদ্দিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারীসহ আট দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।