
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় আধিপত্য নিয়ে তীব্র সমালোচনার সুর তুলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন ডাকসুর ভিপি মো. আবু সাদিক কায়েম। তিনি দাবি করেছেন, দেশের ওপর বাইরের প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে আজীবন সোচ্চার ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী।
বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর রাতে পাবনার সাঁথিয়ার ফুটবল মাঠে আয়োজিত ছাত্র ও যুব সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, দিল্লির দালালদের কারণে দেশ একসময় অস্থিতিশীলতার দিকে ধাক্কা খেয়েছিল। বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন মাওলানা নিজামী নিয়মিতভাবে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতেন এবং এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছেন। তিনি বলেন, “দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এক টাকার দুর্নীতিও তিনি করেননি এটি কেউ প্রমাণ করতে পারেনি।”
সীমান্ত পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে সাদিক কায়েম অভিযোগ করেন, ভারত বহু বছর ধরে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে আসছে। তাঁর ভাষায়, “এখনও পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। কাঁটাতারের বেড়ায় লাশ ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। জন্ম থেকে দেখে আসছি- ভারত এ দেশে আধিপত্য ও আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।” তিনি ঘোষণা দেন, নতুন বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ বা শাহবাগী দালালদের রাজনীতি আর চলতে দেওয়া হবে না।
তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও অখণ্ডতা রক্ষায় কোনো আপস করা যাবে না এবং প্রয়োজনে প্রাণ দিতেও হবে। তাঁর কথা, “সেদিন শহীদরা শাহাদাতের তামান্না নিয়ে রাজপথে নেমেছিলেন। তারাই আমাদের প্রেরণার বাতিঘর।” তিনি আরও বলেন, জনগণের আশা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।
ইনসাফের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “দাঁড়িপাল্লাকে বিজয়ী করতে শপথ নিতে হবে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনসাফের প্রতিনিধিরা বিজয়ী হয়েছে। আগামী দিনে জনগণ দাঁড়িপাল্লাকে বিজয়ী করতে উদগ্রীব।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামীর দেশ হবে শহীদ তিতুমীর, শাহ জালাল ও জুলাইয়ের শহীদদের আদর্শে গড়া বাংলাদেশ। তরুণদের ঐক্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, পিছনের দরজা দিয়ে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে না এবং চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।
আসন্ন নির্বাচনে তরুণদের সক্রিয় ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়া এবং ন্যায্য ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্বও তরুণদেরই পালন করতে হবে। তিনি বলেন, নাজিব মোমেন শহীদ নিজামীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসছেন এবং সাঁথিয়াকে রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তাই মোমেনকে বিজয়ী করাই হবে প্রধান লক্ষ্য। তিনি যোগ করেন, নতুন বাংলাদেশে বিভাজন নয়, বরং সব সম্প্রদায়ের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষাব্যবস্থা, হাসপাতাল পরিচালনা এবং তরুণদের কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
সাঁথিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পাবনা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল, পাবনা-১ আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত এমপি প্রার্থী ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির প্রিন্সিপাল মাওলানা ইকবাল হোসাইন, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল গাফফার খান, পাবনা-২ আসনের এমপি প্রার্থী অধ্যাপক হেসাব উদ্দিন এবং সহকারী সেক্রেটারি আবু সালেহ আব্দুল্লাহসহ অন্যান্য নেতারা।