
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নে চাঁদা আদায় করতে গিয়ে গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে অমৃত মণ্ডল ওরফে সম্রাট (৩৫) নামে এক চিহ্নিত চাঁদাবাজ নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে হোসেনডাঙ্গা ও বসুয়া গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটার গানসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের হোসেনডাঙ্গা ও বসুয়া গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটার গানসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, নিহত অমৃত মণ্ডল ওরফে সম্রাট কলিমহর ইউনিয়নের হোসেনডাঙ্গা গ্রামের কামারের মোড় এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি মৃত অক্ষয় মণ্ডলের ছেলে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, অমৃত মণ্ডল ২০১৪ সালে ভারতে চলে যান। তার আগে তিনি এলাকায় কামারের কাজ করতেন। ভারতে যাওয়ার পর তার নামেই এলাকায় ‘সম্রাট বাহিনী’ নামে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে ওঠে। এই বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি একটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
পুলিশ জানায়, বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে সম্রাট ১০ থেকে ১২ জন সহযোগী নিয়ে কলিমহর ইউনিয়নের হোসেনডাঙ্গা গ্রামের শহীদ শেখের বাড়িতে যান চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে। বাড়িতে উপস্থিত লোকজন চিৎকার শুরু করলে আশপাশের প্রতিবেশীরা জড়ো হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সম্রাট ও তার সঙ্গীরা পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় গ্রামবাসী তাদের ধাওয়া দেয়।
পালানোর এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বসুয়া গ্রামে স্থানীয়রা সম্রাট ও তার সহযোগী সেলিমকে ধরে ফেলেন এবং গণপিটুনি দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অমৃত মণ্ডলকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। একই সঙ্গে তার সহযোগী সেলিমকে একটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটার গানসহ আটক করা হয়। আটক সেলিম বসুয়া গ্রামের মো. ইসলাম শেখের ছেলে।
ঘটনার বিষয়ে শহীদ শেখের চাচাতো ভাই হানিফ শেখ বলেন, ‘এক মাস আগে সম্রাট আমার ভাইয়ের কাছে মোবাইল ফোনে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেয়ায় নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিল। বুধবার রাতে সে দলবল নিয়ে আবার চাঁদা চাইতে আসে। তখন গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।’
নিহত সম্রাটের বড় ভাই অমিয় মণ্ডল বলেন, ‘ভোরে পুলিশ এসে আমাকে ডেকে তোলে। এর আগে আমি কিছুই জানতাম না। আমার ভাই ২০১৪ সালে ভারতে চলে যায়। এরপর তার সঙ্গে আমার আর যোগাযোগ ছিল না। ভারত থেকে কবে দেশে এসেছে তাও জানি না।’
পাংশা মডেল থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম আরও জানান, অমৃত মণ্ডল ওরফে সম্রাটের বিরুদ্ধে আগে থেকেই একটি হত্যা মামলা ও একটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, সম্রাট নিহতের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।