.jpg)
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের কারাবন্দি নেতা ইমরান খানকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর- এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। ইমরান খান ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব এখন নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। উভয় পক্ষ থেকেই একের পর এক কঠোর বক্তব্য ছোড়া হচ্ছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) এক্স- এ প্রকাশিত পোস্টে সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বলে সরাসরি আক্রমণ করেন কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে।
ইমরান খানের অভিযোগ, মুনিরের ‘নৈতিক দেউলিয়াপনাই পাকিস্তানের সংবিধান ও আইনের শাসনকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছে।’ তিনি দাবি করেন, সেনাপ্রধানের নির্দেশে তাকে ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে বানানো মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং তাঁদের ওপর ‘মানসিক নির্যাতন’ চালানো হয়েছে।
সেনাপ্রধানকে আক্রমণ করে ইমরান আরও বলেন, ‘আসিম মুনিরের নীতিগুলো দেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে এনেছে। সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে, যা আমাকে গভীরভাবে কষ্ট দেয়।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘তার পাকিস্তানের জাতীয় স্বার্থ নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। পশ্চিমাদের তুষ্ট করতেই তিনি এসব করছেন। আন্তর্জাতিকভাবে নিজেকে মুজাহিদ হিসেবে তুলে ধরতে ইচ্ছাকৃতভাবে আফগানিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়িয়েছেন।’
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনেও এসব বক্তব্যের কড়া জবাব দেন আইএসপিআর মহাপরিচালক আহমেদ শরিফ চৌধুরী। নাম উল্লেখ না করলেও ইমরান খানকেই ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন এবং অস্থিরতা উসকে দিচ্ছেন।’
ইমরান খানের মানসিক অবস্থা নিয়ে কঠোর মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বয়ান এখন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য স্পষ্ট হুমকি। তার অহংকার এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে তিনি মনে করেন- আমি না থাকলে কিছুই থাকবে না।’
চৌধুরী আরও বলেন, সেনাবাহিনী বা এর নেতৃত্বকে আক্রমণ মানে রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলা। তার ভাষায়, ‘পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা সংবিধান ও আইনকে উপেক্ষা করে নিজের বয়ান চাপিয়ে দিতে চাইছেন।’
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘কোন আইনে একজন দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়? আর দেখা হলেই তিনি সেনাবাহিনী ও নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বক্তব্য ছড়িয়ে দেন।’
হুঁশিয়ারি দিয়ে আইএসপিআর ডিজি বলেন, ‘আমরা দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সম্মান করি, তবে সেনাবাহিনীকে রাজনীতির বাইরে রাখুন। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে উসকে দেওয়ার যে কোনো চেষ্টা প্রতিহত করা হবে।’