
নেপালের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি আবারও তার রাজনৈতিক দলের প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দলের সদস্যরা তাকে নেতৃত্বে বহাল রাখার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। এর ফলে আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির দায়িত্বও তার কাঁধে পড়েছে।
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি ইউনিফায়েড মার্কসিস্ট-লেনিনিস্ট (সিপিএন-ইউএমএল) রাজধানী কাঠমান্ডুতে দুই দিনের সাধারণ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোটাভুটিতে দলের প্রধান নির্বাচন করে। ভোটে অলি পুরোপুরি আধিপত্য দেখান এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈশ্বর পোখরেলের তুলনায় প্রায় তিন গুণ ভোট পান। এফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অলি ১ হাজার ৬৬৩ ভোট পান, আর পোখরেল পান ৫৬৪ ভোট।
৭৩ বছর বয়সী অলি গত বছরের সেপ্টেম্বরে জেন-জি আন্দোলনের পর সরকারের পতনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। আন্দোলনে অন্তত ৭৭ জন নিহত হন এবং দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা আরও গভীর হয়। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে এবার তিনি আবারও দলের শীর্ষে ফিরেছেন।
অলি নিজেকে দলের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার সমর্থকরা বিভিন্ন সমাবেশে ‘কেপি বা (বাবা), আমরা তোমাকে ভালোবাসি’ ধরনের পোস্টার ও ব্যানার বহন করেছেন। পশ্চিম নেপালের গণ্ডকি প্রদেশ থেকে সম্মেলনে অংশ নেওয়া ৪৫ বছর বয়সী তারা মায়া থাপা মাগার বলেন, “এই মুহূর্তে জাতির জন্য তিনিই প্রয়োজন।”
সেপ্টেম্বরের বিক্ষোভ চলাকালীন অলি’র বাসভবন, সংসদ ভবন ও অন্যান্য সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ হয়। কয়েকদিন পর তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বলেন, “আমার পদত্যাগ রাজনৈতিক সমাধান ও সমস্যার নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে।”
অলির ক্ষমতাচ্যুতির পর সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশিলা কার্কি অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি আগামী ৫ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের আগে দেশকে নেতৃত্ব দেবেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, নির্বাচন হবে ন্যায্য ও ভয়মুক্ত পরিবেশে।
যদিও নির্বাচনের আগে নেপালের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত রয়ে গেছে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দুর্নীতি ও প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগণের অবিশ্বাস নির্বাচনের সময় বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়াবে।
সূত্র: এএফপি।