
দুর্যোগের মুহূর্তে ধৈর্য ধরে থাকা প্রয়োজন। মহান আল্লাহ মানুষকে সতর্ক করার জন্য কখনও কখনও বিভিন্ন বিপদ-আপদ পাঠিয়ে থাকেন। মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, “আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান, মাল ও ফলফলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, নিজেদের বিপদ-মুসিবতের সময় বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী, তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭)”
কিছু সুন্নত আমল অনুসরণ করলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। হাদিস শরিফে আছে, যখন কোথাও ভূমিকম্প সংঘটিত হয় অথবা সূর্যগ্রহণ হয়, ঝোড়ো বাতাস বা বন্যা হয়, তখন সবার মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা উচিত। এছাড়াও আল্লাহর কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা, মহান আল্লাহকে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, “দ্রুততার সঙ্গে মহান আল্লাহর জিকির করো, তার কাছে তওবা করো। (বুখারি: ২/৩০; মুসলিম: ২/৬২৮)”
নামাজ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত এবং দোয়া-দরুদ পাঠ করা আল্লাহর জিকিরের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। দুর্যোগের সময়ে ইস্তিগফার ও তাসবিহসহ বিভিন্ন জিকিরও কার্যকর উপায় হতে পারে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, “প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া বইলে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে যেতেন এবং নামাজে মশগুল হতেন। (মিশকাত শরিফ: ৬৯৬)”
মহান আল্লাহ মানুষকে তাঁর সৃষ্টিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ করে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর আজাব থেকে রক্ষা পেতে নিজেদের আমলকে পরিশুদ্ধ করা জরুরি। যে কর্মে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, সে ধরনের নেক আমল বেশি বেশি করতে হবে। তাই নামাজ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত, দান-সদকা ও অন্যান্য সৎকর্ম নিয়মিতভাবে করা উচিত। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, “সদকা মহান আল্লাহর অসন্তুষ্টিকে নিভিয়ে দেয় এবং অপমৃত্যু রোধ করে। (তিরমিজি: ৬০০)”
ভারি বৃষ্টিপাত বন্ধ হওয়ার দোয়া: اللّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا، اللّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالظِّرَابِ وَبُطُونِ الأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা, আল্লাহুম্মা আলা আল-আকামি ওয়াজ-জিরাবি ওয়া বুতুনি আল-আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতি আশ-শাজার।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের চারপাশে বৃষ্টি বর্ষণ করুন, আমাদের ওপর নয়। হে আল্লাহ! পর্বতমালা, পাহাড়ের ঢাল, উপত্যকা এবং গাছপালার উপর বর্ষণ করুন।