
আগামী মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সোমবার ক্যানবেরায় সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ।
তিনি জানান, “মধ্যপ্রাচ্যের সহিংসতার চক্র ভাঙতে এবং গাজায় চলমান সংঘাত, দুর্ভোগ ও অনাহার বন্ধে দুই রাষ্ট্র সমাধানই মানবতার জন্য সবচেয়ে বড় আশা।” আলবানিজের মতে, পৃথক ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণা স্থায়ী না হলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আসবে না।
অস্ট্রেলিয়ার সিদ্ধান্তের আগে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছে, যা সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের অধিবেশনে আনুষ্ঠানিক হবে। এদিকে জার্মানির ফরসা ইনস্টিটিউট ফর ফরেন পলিসি ও জার্নাল ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্সের এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির ৫৪ শতাংশ নাগরিক ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে।
আলবানিজ বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব রাষ্ট্র পাওয়ার অধিকারকে অস্ট্রেলিয়া স্বীকৃতি দেবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে। তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না বলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ তাকে আশ্বস্ত করেছে—এ আশ্বাস পাওয়ার পরই ক্যানবেরা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির পথে এগিয়েছে।
তবে বর্তমানে গাজায় মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই; প্রায় দুই দশক ধরে অঞ্চলটি হামাসের দখলে। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা দেশগুলো ‘দুই রাষ্ট্র সমাধান’কে সরাসরি শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সামনে আনছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইউরোপীয় কয়েকটি দেশ ও অস্ট্রেলিয়ার পরিকল্পনার সমালোচনা করে বলেছেন, এতে শান্তি নয়, বরং আরও সংঘাতের জন্ম হবে। তিনি এ সিদ্ধান্তকে ‘হতাশাজনক ও লজ্জাজনক’ বলে উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স জানিয়েছেন, তার দেশও আগামী মাসে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৫ জন ত্রাণপ্রত্যাশীসহ ৬১ জন নিহত হয়েছেন। অনাহারে মারা গেছে অন্তত ২১৭ জন, যার মধ্যে ১০০ শিশু। চলমান হামলায় মোট ৬১ হাজার ৪৩০ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ২১৩ জন।