
বিচারপ্রত্যাশী মানুষের সময়, শ্রম এবং অর্থ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকার লিগ্যাল এইড কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে এবং এ কাজের জন্য অনুদানের ওপর নির্ভর করবে না বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
সোমবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন এডিআর: রোল অব ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল এইড কমিটিস ইন ইমপ্লিমেন্টিং নিউ লেজিসলেশন্স’ শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আমাদের অর্থের সংকুলান আছে। তবে সেটিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারলে অনেক কিছুই করা যাবে। এক টাকা পরিমাণ অর্থ অনুদান না পেলেও আমরা বসে থাকব না, যতদিন মেয়াদ অবশিষ্ট আছে আমরা কাজ করে যাব এবং এমন ব্যবস্থা করে যাব, যেন আমরা চলে গেলেও মানুষ এর উপকার পান।”
তিনি আরও বলেন, “সত্যিকারার্থে মানুষকে সেবা না দিতে পারলে আইন বা সরকারের প্রচেষ্টার কোনো মূল্য থাকবে না। আমাদের যে অর্থ আছে, ক্ষমতা আছে, সেটার যথাযথ ব্যবহারে আমরা অনেক কিছুই করতে পারি। আইনগত সংস্কারের পাশাপাশি আমাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল ব্যবস্থারও প্রয়োজন এবং সেটার সামর্থ্য আমাদের আছে। আর যে ছয় মাস আমরা আছি, এর মধ্যে প্রত্যেকটি জেলায় লিগ্যাল এইডের জন্য আমরা ব্যবস্থা করে যাব।”
লিগ্যাল এইডকে আরও সহজলভ্য করা গেলে বিপুল সংখ্যক মানুষের সময় ও অর্থ সাশ্রয় সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, “লিগ্যাল এইডকে সহজলভ্য করে তুলতে পারলে খুব সহজে, অতি অল্প খরচে কত শত মানুষের সমস্যার সমাধান করতে পারব ভেবে দেখবেন। লিগ্যাল এইড সেবা পেয়েছেন এমন ৯০ ভাগ মানুষ এর রায়ের ক্ষেত্রে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তারা লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান পাচ্ছেন আদালতের তুলনায় ১০ ভাগের একভাগ সময়ে।”
আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “এসব ধারণা থেকে লিগ্যাল এইডকে বাধ্যতামূলক করা যায় কি না সে ভাবনা আমরা ভাবতে শুরু করি।”
তিনি জানান, ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতি মাসে দুই লাখ মামলা লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভায় স্বাগত বক্তব্য ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এইচ. ই. মাইকেল মিলার এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
সমাপনী বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগ সচিব শেখ আবু তাহের। এতে বিচার বিভাগের বিচারক, আইন মন্ত্রণালয় ও জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশ নেন।