
মৃত্যু জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। জন্ম নেওয়া মানেই একদিন চলে যেতে হবে মায়া-মমতাময় দুনিয়ার সব রং ছেড়ে না ফেরার পথে পাড়ি জমাতে হবে, যেখানে বন্ধু-শত্রু নেই, দায়িত্ব নিতে হবে একাকী।
এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তোমরা নিজ নিজ কাজের প্রতিফল সম্পূর্ণভাবেই কিয়ামতের দিন পাবে।” (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫, সুরা আনকাবুত : ৫৭)
সুরা নাহলে আরও বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহূর্তও বিলম্ব বা ত্বরান্বিত করতে পারবে না। (আয়াত : ৬১)
মৃত্যুর পর বান্দার কর্মই নির্ধারণ করবে তার পরকালের ঠিকানা জান্নাত নাকি জাহান্নাম। তাই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পরকালে সফল হওয়া এবং আল্লাহর হুকুম মানা অপরিহার্য। পাশাপাশি নবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করাও অত্যাবশ্যক।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, যারা ইমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তাদের সুসংবাদ দাও, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে।” (সুরা বাকারা : ২৫)
এছাড়া বলা হয়েছে, “আর যারা ইমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তারা জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে। (সুরা বাকারা : ৮২)
হাদিসে নবীজি (সা.) অনন্য আমলের পথও বর্ণনা করেছেন। ছোট্ট একটি আমল আয়ত্ত করলেই একশ গুনাহ মাফ ও সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করা সম্ভব। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি নিচের দোয়াটি দিনে একশ বার পাঠ করবে, সে দশজন গোলাম আজাদ করার সাওয়াব পাবে, তার আমলনামায় একশ নেকি লিপিবদ্ধ হবে এবং একশ গুনাহ মুছে যাবে। সেই দিন শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকেও সে রক্ষা পাবে।” (বোখারি : ৩২৯৩)
দোয়াটি হলো:
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
বাংলা উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিং কদীর।
অর্থ: “আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনো শরিক নেই, রাজত্ব তাঁরই, যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই, তিনিই সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।”
সঙ্গতভাবে মুসলিম শরিফে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি দিনে একশবার সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি পাঠ করবে, তার যাবতীয় গুনাহ মুছে যাবে, এমনকি সমুদ্রের ফেনার সমতুল্য হলেও।” (হাদিস : ৬৫৯৮)
এই নির্দেশনা আমাদের স্মরণ করায় যে, মৃত্যুর পরকালে সাফল্য অর্জনের জন্য নেক আমল ও দৈনন্দিন ইবাদত অপরিহার্য।