
জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ। তার মতে— গত ১৬ বছরে দেশে যে ফ্যাসিবাদী শাসন চলে এসেছে, তাতে রাষ্ট্রের মৌলিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়েছে। এখন প্রয়োজন, গণতান্ত্রিক চেতনার ভিত্তিতে নতুন করে রাষ্ট্র বিনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সংসদ ভবনের এলডি হলে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্র গঠনের পথ খুঁজতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ শুধু রাজনীতি নয়, প্রতিষ্ঠানগুলোকেও দুর্বল করে দিয়েছে। এখন প্রয়োজন জাতীয় সংলাপ, যাতে সবাই একসঙ্গে বসে ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি করতে পারে।’
ড. আলী রীয়াজ মনে করেন, শুধু সরকারের সদিচ্ছা যথেষ্ট নয়—গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তুলতে হলে সকল পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে। ‘গণতান্ত্রিক সমাজে মতের ভিন্নতা থাকবেই’,—উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তবে লক্ষ্য যদি অভিন্ন হয়, তাহলে ঐক্য সম্ভব। এই ঐক্যের ওপরই নির্ভর করবে আমাদের সংগ্রামের সফলতা।’
বৈঠকে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘মানুষ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে হলে রাজনৈতিক সংস্কার এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে এগোতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যেখানে ভিন্নমতের কারণে কেউ নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শুধু কাগজে-কলমে নয়, বাস্তবেও প্রতিফলিত হতে হবে।’
সাইফুল হক জানান, বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো আগেই যে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে, তা ঐকমত্য কমিশনের কাজকে সহজ করেছে।
তার প্রত্যাশা, জুনের শুরুতেই ন্যূনতম কিছু প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরি হবে। ‘এখন দরকার বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো। বেশি টানাহেঁচড়া না করে ন্যূনতম ঐক্য অর্জনে কাজ করতে হবে।’
তিনি মনে করেন, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগ সফল হবে।