
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপীয় দেশগুলোকে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে চীনকে যুদ্ধ অর্থায়নে সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের ওপরও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে বলেছেন তিনি।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত “কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং” বৈঠকে ভিডিও কলে অংশ নেন ট্রাম্প। বৈঠকে রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির পর ইউক্রেনকে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে অংশ নেওয়া এক শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা জানান, “ম্যাক্রোঁ ও ইউরোপীয় নেতারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান। ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেন, ইউরোপকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে হবে। কারণ শুধু এক বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি কিনে ১.১ বিলিয়ন ইউরো দিয়েছে।”
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর ইউরোপ রাশিয়ার জ্বালানিনির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করে। ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, ২০২৮ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ ২০২২ সালে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল এবং ২০২৩ সালে গ্যাস আমদানি বন্ধ করলেও হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার মতো কিছু দেশ এখনও সীমিত পরিমাণে তেল নিচ্ছে। এছাড়া ভারতসহ তৃতীয় দেশ থেকে রাশিয়ার তেল প্রক্রিয়াজাত করে ইউরোপে পাঠানো হচ্ছে। ট্রাম্প কোন ধরনের আমদানিকে লক্ষ্য করেছেন, তা স্পষ্ট করেননি।
বৈঠকে ট্রাম্প আরও বলেন, “রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থায়নে চীনও ভূমিকা রাখছে, তাই তাদের ওপরও অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে হবে।”
ওই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’-এর বৈঠক ছিল ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশ্ন তুলেছেন, ইউরোপীয়রা যদি এখনো রাশিয়ার অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখে, তবে তাদের আন্তরিকতা কোথায়? তিনি পরিষ্কার করেছেন, এটি তার যুদ্ধ নয়, ইউরোপীয়দেরই আরও দায়িত্ব নিতে হবে।”
এর আগে, রাশিয়ার তেল কিনলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। যদিও গত এপ্রিলে বহু দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করলেও রাশিয়ার ওপর সরাসরি কোনো শুল্ক দেননি।
অন্যদিকে, বৈঠকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ জানান, যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ইউক্রেনে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে নিরাপত্তা দিতে আন্তর্জাতিক বাহিনী পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ২৬টি দেশ।