
এবি পার্টি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নয় দফা প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে নিশ্চিত করা যায় অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু বলেন, প্রস্তাবগুলো বিশেষভাবে ভোটারদের অংশগ্রহণ, নিরাপত্তা এবং নির্বাচনী ব্যয় নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এসব তথ্য জানান।
স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ব্যবহার:
মঞ্জু বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের নির্বাচনকালীন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। তিনি যুক্তি দেন, “সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে চমৎকার ভূমিকা রেখেছে। ভোটার না হলেও তাদের নৈতিক আবেদন সহিংসতা রোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।” ইসি প্রস্তাবটিকে ইতিবাচক ভাবনা হিসেবে দেখেছে।
নির্বাচনী ব্যয়ের সংস্কার:
এবি পার্টি তিনটি মূল প্রস্তাব দিয়েছে—পোস্টার মুদ্রণ, জনসভা ও ভোটারদের যাতায়াত।
পোস্টার মুদ্রণ: প্রার্থীদের যত্রতত্র পোস্টার লাগানো থেকে বিরত রাখতে এবং পরিবেশ রক্ষা করতে, ইসি নিজেই প্রার্থীদের পোস্টার ছাপানোর দায়িত্ব নিতে পারে। এতে পরিবেশও রক্ষা হবে এবং প্রার্থীদের খরচও কমবে।
জনসভা: বড় জনসভা ও মিছিলের খরচ ও সহিংসতা কমাতে বিকল্প ব্যবস্থা প্রয়োজন।
ভোটারদের যাতায়াত: ভোটারদের কেন্দ্রে আনা-নেওয়ার খরচ প্রার্থীদের বহন না করতে ইসি শাটল সার্ভিস চালু করতে পারে। এছাড়া, পোলিং এজেন্টদের খাবার ও নাস্তার ব্যবস্থাও প্রয়োজন। এতে মধ্যবিত্ত প্রার্থীরাও স্বচ্ছভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
উন্মুক্ত স্থানে ভোটকেন্দ্র:
এবি পার্টি প্রস্তাব দিয়েছেন, ভোটকেন্দ্র রুমের ভিতরে না করে উন্মুক্ত স্থানে স্থাপন করা হোক। এতে ভোটগ্রহণ আরও স্বচ্ছ হবে এবং ভোট চুরি বা বাক্স চুরির মতো অনিয়ম প্রতিরোধ সহজ হবে। সাংবাদিকরাও পুরো প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
প্রবাসী ও দ্বৈত নাগরিকদের ভোটাধিকার:
দ্বৈত নাগরিকদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। একই সঙ্গে প্রবাসীদের ভোটাধিকার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে যোগ্য ও ন্যায্য প্রার্থী রাজনীতিতে আসবেন।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও বর্তমান পরিস্থিতি:
এবি পার্টি মনে করে, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। তারা বলেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু উদ্বেগ থাকলেও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব। তবে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে এবং সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে।” দলটি যারা নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন, তাদের উদ্বেগকেও বৈধ বলে মনে করছে।