
লন্ডনের নাইটসব্রিজে তুর্কি কনস্যুলেটের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় এক ব্যক্তিকে ধর্মীয়ভাবে উদ্বুদ্ধ জনশৃঙ্খলার মারাত্মক লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সোমবার আদালত রায়ে জানায়, অভিযুক্তের আচরণ আংশিকভাবে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষ দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিল।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ঘটনাটি ঘটে। সেখানে হামিদ কোস্কুন নামে পরিচিত এক ব্যক্তি কোরআনের একটি অনুলিপি আগুনে পুড়িয়ে তা মাথার ওপর তুলে ধরেন এবং উসকানিমূলক স্লোগান দেন। তিনি দাবি করেন, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের ‘ইসলামপন্থি সরকারের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এই কাজ করেছেন। নিজেকে আর্মেনীয়-কুর্দি বংশোদ্ভূত হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি তুরস্ক থেকে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে এসেছেন।
তবে আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ফিলিপ ম্যাকগি বলেন, এই মামলাটি কোনও ধর্মের সমালোচনা নিয়ে নয়, বরং জনসমক্ষে একটি বিশৃঙ্খল আচরণ নিয়ে।
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তকে শাস্তি দেওয়া হলেও তা কারও ধর্মীয় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করছে না।
রায় ঘোষণার সময় আদালত আরেকটি ঘটনার কথাও উল্লেখ করে, যেখানে এক পথচারী কোস্কুনকে আক্রমণ করেছিলেন। সেই পথচারী দোষ স্বীকার করেছেন এবং তার বিচার হওয়ার কথা রয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশে আদালত আপাতত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
ঘটনার পর ব্রিটিশ রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে। শ্যাডো জাস্টিস সেক্রেটারি রবার্ট জেনরিক মন্তব্য করেছেন, এই রায় যেন সংসদে বাতিল হয়ে যাওয়া ব্লাসফেমি আইনকে নতুনভাবে ফিরিয়ে আনলো।
তার মতে, এটি বাকস্বাধীনতা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার ভারসাম্য নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাংবাদিক মাহবুবুল করীম সুয়েদ মন্তব্য করেন, কোরআন পোড়ানোর এ ঘটনার পেছনে অভিযুক্ত ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।
তিনি আরও বলেন, এই ধরনের ঘটনা ব্রিটিশ মুসলিম ও বাংলাদেশি কমিউনিটিতে উদ্বেগ ও ক্ষোভের জন্ম দেয়। ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানোর পরিবর্তে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া গড়ে তোলাই হওয়া উচিত আমাদের লক্ষ্য।