
গাজায় অবিলম্বে, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে ইসরায়েলের সব ধরনের বাধা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আনা একটি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়েছে। প্রায় দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সংঘাত নিয়ে এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ ভেটো।
রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের মধ্যে নির্বাচিত ১০টি দেশ এই প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করে। এতে আরও বলা হয়েছিল, হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠীর হাতে আটক সব বন্দিকে অবিলম্বে, মর্যাদাপূর্ণ ও শর্তহীনভাবে মুক্তি দিতে হবে।
প্রস্তাবের পক্ষে ১৪টি ভোট পড়লেও যুক্তরাষ্ট্র স্থায়ী সদস্য হওয়ায় তাদের ভেটোর ফলে এটি বাতিল হয়ে যায়।
ভোটের আগে নিরাপত্তা পরিষদে ডেনমার্কের জাতিসংঘ দূত ক্রিস্টিনা মার্কাস ল্যাসেন বলেন, “গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন অনুমানকৃত বা ঘোষিত নয়, এটি নিশ্চিত হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েল গাজা সিটিতে সামরিক অভিযান বাড়িয়েছে, যা বেসামরিক নাগরিকদের কষ্ট আরও বাড়াচ্ছে। এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতি ও মানবিক ব্যর্থতাই আমাদের আজকে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।”
গত মাসে বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষণকারী একটি সংস্থা জানিয়েছিল, গাজা সিটি ও এর আশপাশের এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ চলছে এবং তা আরও বিস্তার লাভ করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্র ঐতিহ্যগতভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে আসছে। তবে গত সপ্তাহে তারা নিরাপত্তা পরিষদের এক বিবৃতিতে বিরলভাবে সমর্থন দিয়েছিল, যেখানে কাতারে হামলার নিন্দা জানানো হয়। যদিও সেই বিবৃতিতে ইসরায়েলের নাম ছিল না।
তবে বৃহস্পতিবারের ভেটো ফের প্রমাণ করল, ইসরায়েলের কূটনৈতিক সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র এখনো সক্রিয়।
ভোটের আগে মার্কিন কূটনীতিক মরগান ওর্তাগাস বলেন, “এই যুদ্ধ শুরু ও চালিয়ে যাওয়ার জন্য হামাস দায়ী। যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তাবিত শর্তগুলো ইসরায়েল মেনে নিয়েছে, কিন্তু হামাস তা প্রত্যাখ্যান করছে। হামাস যদি আজ বন্দিদের মুক্তি দিত এবং অস্ত্র সমর্পণ করত, তাহলে যুদ্ধ আজই শেষ হয়ে যেত।”