
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন না হলে দেশে শুধু অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতাই নয়, জাতীয় নিরাপত্তাও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে নির্বাচনের ফলেও মৌলিক কোনো পরিবর্তন আসবে না।
শনিবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে প্রথম আলোর কার্যালয়ে আয়োজিত ‘নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক সমঝোতার পথ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আমি বারবার আহ্বান জানিয়েছি। তারা সাড়া দিয়েছে বটে, কিন্তু কোনো না কোনো সময় এ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। এটি অনিঃশেষভাবে চলতে পারে না। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন জরুরি। ফেব্রুয়ারিতে ভোট না হলে শুধু অভ্যন্তরীণ অস্থিরতাই নয়, জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে বলেই আমি মনে করি। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা।
তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচন আমরা করছি রাষ্ট্রকাঠামোর সংস্কারের লক্ষ্য সামনে রেখে। সংস্কার কমিশনে কাজ করার সময় দেখেছি, গত ১৬ বছরের সংকট কেবল ওই সময়ের সমস্যা নয়। ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে এর ভয়াবহতা স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু কাঠামোগত দিক থেকে আমরা ধীরে ধীরে এই অবস্থায় পৌঁছেছি।
আলী রীয়াজের মতে, কাঠামোগত পরিবর্তন এড়িয়ে সামান্য সংস্কার করলে নির্বাচনের মাধ্যমে কেবল ক্ষমতার পালাবদলই ঘটবে। তিনি বলেন, একজন জিতবে, একটি দল সরকার গঠন করবে কিন্তু আমরা চাই একটি সুসংহত গণতন্ত্র। তিন দফায় (১৯৭৩, ১৯৯১ ও ২০০৯) চেষ্টা করেও আমরা তা পাইনি। কাঠামোগত সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য না হলে আবারও নির্বাচনের পর মৌলিক কোনো পরিবর্তন হবে না।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে উঠেছিল, পরে তা ভেঙে যায়। এর ফলেই ভিন্নমত ও বিভাজন তৈরি হয়েছে। তার মতে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে যদি রাজনৈতিক লক্ষ্য স্পষ্ট করা যায়, তবে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথে এগোনো সম্ভব হবে।