
পুরনো ধারার প্রতিহিংসামূলক রাজনীতিকে স্পষ্টভাবে না বলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বলছে, তারা এসেছে নতুন রাজনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠা করতে—যেখানে মতবিরোধ থাকবে, কিন্তু হিংসা কিংবা সহিংসতার জায়গা থাকবে না।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইল মোড়ে এনসিপির জুলাই মাসব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত এক পথসভায় এসব কথা বলেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা।
তিনি বলেন, “আমরা আর পুরনো রাজনীতির সংস্কৃতিতে ফেরত যাবো না।” একইসঙ্গে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, “কোনও প্রতিহিংসার রাজনীতির সংস্কৃতিতে আমরা আর ফেরত যাবো না। আমাদের মধ্যে মতের পার্থক্য থাকবে, মতবিভেদ থাকবে, মতবিরোধ থাকবে, কিন্তু সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। প্রতিহিংসা, সহিংসতা, প্রাণনাশের হুমকি—সেই রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আর ফেরত যাবো না। আমরা নতুন ধারার রাজনীতি করতে এসেছি।”
তাসনিম জারা বলেন, এনসিপি এমন একটি রাজনৈতিক ধারা গড়তে চায়, যেখানে তরুণরা হবে কেন্দ্রবিন্দু। “আমরা এমন ধরনের রাজনীতি করবো, যেখানে তরুণরা সক্রিয় অংশগ্রহণ করবে। এমন রাজনীতি করবো, যাতে তরুণরা আবার রাজনীতিবিমুখ হয়ে না পড়ে,” বলেন তিনি।
তিনি আরও জানান, এনসিপির সঙ্গে দেশের প্রতিটি জেলায় তরুণদের বিপুল অংশগ্রহণ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। “তরুণরা দেশ নিয়ে ভাবছেন, স্বপ্ন দেখছেন, পরিবর্তনের জন্য কাজ করার চেষ্টা করছেন। একটা প্রজন্মগত রূপান্তর ঘটে গেছে,” মন্তব্য করেন জারা।
রাজনৈতিক সচেতনতার যে ধারা দেশে তৈরি হয়েছে, তা ধরে রাখার তাগিদ দেন তিনি। তার মতে, তরুণদের রাজনীতি বিমুখ হয়ে পড়া মানেই আবার জাতি সংকটে পড়বে—যা কখনো কাম্য নয়।
নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়েও কথা বলেন তিনি। “আমরা বলছি, আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা যারা কষ্ট করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠান, তারা যাতে ভোট দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা করতে হবে,” বলেন এনসিপির এই নেত্রী।
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা এমন রাজনীতি করবো, যেখানে শুধু নিজের স্বার্থের জন্য রাজনীতি করা হবে না। রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করবেন জনগণের স্বার্থে। আমরা জানি চ্যালেঞ্জ অনেক, কিন্তু মানুষ যখন জাগে, তখন ইতিহাস বদলায়। আমরা আপনাদেরকে নিয়ে ইতিহাস বদলাবো।”
পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটওয়ারী, ঢাকা জেলার প্রধান সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী মেহরাব সিফাতসহ অন্যান্য নেতারা।