
তুরস্কের জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে শাসক একে পার্টি এবং প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি’র সংসদ সদস্যদের মধ্যে তীব্র হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ১০ মিনিট ধরে চলা এই সংঘর্ষের কারণে সংসদ স্পিকারকে অধিবেশন স্থগিত করতে হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) গভীর রাতে বাজেট আলোচনা চলাকালীন বুরসা থেকে নির্বাচিত একে পার্টির এমপি মুস্তাফা ভারাঙ্ক এবং সিএইচপি গ্রুপের ডেপুটি চেয়ারম্যান গোকহান গুনাইদিনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
পডিয়াম থেকে বক্তব্য দেওয়ার সময় মুস্তাফা ভারাঙ্ক সিএইচপি চেয়ারম্যান ওজগুর ওজেলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “সিএইচপি-শাসিত শহরগুলোর কৃষকেরা এখনও প্রতিশ্রুত বিনামূল্যের ট্রাক্টরের জন্য অপেক্ষা করছেন।”
এর জবাবে গুনাইদিন সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, “একেক পার্টি রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং সিএইচপি পরিচালিত পৌরসভাগুলোর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়, যখন সিএইচপি গ্রুপ ডেপুটি চেয়ারম্যান আলি মাহির বাসারিকে কেন্দ্র করে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সরাসরি ঘুষি বিনিময়ে রূপ নেয় এবং সংসদের কেন্দ্রীয় চেম্বারে উভয় দলের একাধিক সংসদ সদস্য সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তাকর্মীদের বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়।
প্রায় ১০ মিনিটের মারামারির পর সংসদ স্পিকার নুমান কুরতুলমুশ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। বিরতির সময়ও ধস্তাধস্তি কিছুটা অব্যাহত ছিল।
এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই ২০২৬ সালের কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট আইন পাস হয়। বাজেটের পক্ষে ভোট পড়ে ৩২০টি এবং বিপক্ষে ২৪৯টি। একই সঙ্গে ২০২৪ সালের ফাইনাল অ্যাকাউন্টস আইনও ৩১৬–২৪৭ ভোটে অনুমোদিত হয়।
সংঘর্ষের সময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন সিএইচপি চেয়ারম্যান ওজগুর ওজেল এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলন পার্টির (এমএইচপি) চেয়ারম্যান দেভলেত বাহচেলি।
বিশ্লেষকদের মতে, তুরস্কের সংসদে এই সহিংস ঘটনা দেশের রাজনীতিতে চলমান উত্তেজনার পরিচয় দেয়। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত সংসদে এমন ঘটনা রাজনৈতিক সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।