
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চলমান চুক্তির বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে তীব্র প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে বলেন, এই বন্দরের সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা সরাসরি যুক্ত, তাই বিদেশিদের হাতে টার্মিনাল দেওয়া বিপজ্জনক। তিনি আরও উল্লেখ করেন, রেভিনিউ বাড়ার পরিবর্তে কমবে, কারণ বড় অংশ বিদেশে চলে যাবে।
হাইকোর্ট বেঞ্চের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও ফাতেমা আনোয়ার এই শুনানিতে রুলের পরবর্তী ধাপের জন্য আগামীকাল দিন ধার্য করেছেন। আদালত বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ায় অসন্তোষও প্রকাশ করেছে।
রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ।
এর আগে ১৩ নভেম্বর, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আদালতকে আশ্বস্ত করেছিলেন, রুল শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে হস্তান্তর করা হবে না।
আহসানুল করিম ওই সময় বলেন, “আমরা আবেদন করেছিলাম রুলের শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত টার্মিনাল যেন বিদেশিদের হাতে না দেওয়া হয়, এবং আদালত আশ্বাস পেয়েছে যে তা করা হবে না।”
উল্লেখ্য, ৩০ জুলাই হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছিল, কেন চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না। একই সঙ্গে, নির্দেশ চাওয়া হয়েছিল, যেকোনো অপারেটরকে নিয়োগ দেওয়ার আগে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে।
রিটটি করেছে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরাম, যার পক্ষে সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন নৌ-সচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।
গত ২৬ এপ্রিল জাতীয় দৈনিকে “নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য রিটে সংযুক্ত করা হয়েছে। আদালতে রিটে চাওয়া হয়েছে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বানের নির্দেশনা।