
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ময়মনসিংহের ভালুকায় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তদন্তে গতি এসেছে। পুলিশ নতুন করে আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এতে এ মামলায় আটক ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৮ জনে।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) জেলা পুলিশ কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। সদ্য গ্রেপ্তার হওয়া ছয়জন হলেন— সুনামগঞ্জের তাকবির (২২), ঠাকুরগাঁওয়ের রুহুল আমিন (৪২), ময়মনসিংহ সদরের নূর আলম (৩৩), তারাকান্দা উপজেলার মো. শামীম মিয়া (২৮), নোয়াখালীর সেলিম মিয়া (২২) এবং মাদারীপুরের মো. মাসুম খালাসী।
এর আগে একই মামলায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন— আশিকুর রহমান (২৫), কাইয়ুম (২৫), মো. লিমন সরকার (১৯), মো. তারেক হোসেন (১৯), মো. মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিজুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮), মো. মিরাজ হোসেন আকন (৪৬), মো. আজমল হাসান সগীর (২৬), মো. শাহিন মিয়া (১৯) ও মো. নাজমুল (২১)।
পুলিশ জানায়, নিহত দীপু চন্দ্র দাসের ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে ভালুকা থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। এরপর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে মোট ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ছয় আসামি কারখানার ভেতরে কর্মচারীদের উসকানি ও স্লোগান দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে বাইরে ছড়িয়ে দেন এবং দীপু চন্দ্র দাসকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। তিনি জানান, কেন ওই যুবককে পুলিশের কাছে না দিয়ে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হলো— সেই বিষয়টিও তদন্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কারখানায় ঘটনার সূত্রপাত হয়। ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে জনতা দীপু চন্দ্র দাস (২৮)-কে গণপিটুনি দেয়। পরে তার মরদেহ ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে অর্ধদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।