
চমকপ্রদ এক গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছরের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী। মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস তাদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ ডেভোরেট এবং জন এম মার্টিনিস এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তারা বৈদ্যুতিক বর্তনীর মধ্যে কোয়ান্টাম যান্ত্রিক টানেলিং এবং শক্তির কোয়ান্টাইজেশন সংক্রান্ত যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য এই স্বীকৃতি পান।
এই আবিষ্কারকে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার নতুন এক যুগের সূচনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি। একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়, "এই আবিষ্কার কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। আর এর পুরস্কার স্বরূপ তাদের নোবেলে ভূষিত করা হয়েছে।"
এ বছরের নোবেল বিজয়ী গবেষণার মূল বিষয় ছিল কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অদ্ভুত আচরণ কীভাবে বড় আকারের, বাস্তব জগতে প্রযোজ্য হয়। তিন বিজ্ঞানীর গবেষণা প্রমাণ করেছে, সুপারকন্ডাক্টিং ইলেকট্রিক সার্কিটের মতো মানবসৃষ্ট ব্যবস্থাতেও এই কোয়ান্টাম প্রক্রিয়াগুলো প্রয়োগ করা সম্ভব।
তাদের উদ্ভাবিত বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় একটি অবস্থা থেকে আরেকটিতে সরাসরি ‘টানেলিং’-এর মাধ্যমে পৌঁছানো সম্ভব হয়, যা দেখে মনে হয় যেন কোনো বস্তুর দেওয়াল ভেদ করে পার হয়ে যাওয়া। একই সঙ্গে এই ব্যবস্থা নির্দিষ্ট মাত্রায় শক্তি শোষণ ও বিকিরণ করে, যা কোয়ান্টাম তত্ত্বের ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।
গত বছরের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছিলেন জন জে হোপফিল্ড ও জিওফ্রি ই. হিন্টন। তারা মেশিন লার্নিং ও কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কে মৌলিক আবিষ্কারের জন্য এ পুরস্কার লাভ করেন।
২০২৩ সালের পদার্থবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল জেতেন পিয়ের অগস্টিনি (যুক্তরাষ্ট্র), ফেরেঙ্ক ক্রাউৎজ (হাঙ্গেরি) এবং অ্যানে এলহুইলার (ফ্রান্স)। তাদের গবেষণার মূল বিষয় ছিল ইলেকট্রন গতিবিদ্যা।
নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য কিছু রেকর্ডও রয়েছে। ২০১৮ সালে আর্থুর আসকিন ৯৬ বছর বয়সে পদার্থে নোবেল জিতে এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বয়সে পুরস্কারপ্রাপ্ত হওয়ার ইতিহাস গড়েন। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম বয়সে এই পুরস্কার জেতেন লরেন্স ব্রেগ, যিনি মাত্র ২৫ বছর বয়সে ১৯১৫ সালে নোবেল পান। আর জন বার্ডিন একমাত্র ব্যক্তি যিনি পদার্থবিজ্ঞানে দুইবার নোবেল জয়ের বিরল কীর্তি অর্জন করেছেন।