
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, জনসংখ্যার কাঠামো পরিবর্তন অনুপ্রবেশকারীদের কারণে দেশের বৈচিত্র্যময় ঐক্যের জন্য হুমকি তৈরি করছে। এই পরিবর্তন সামাজিক সম্প্রীতি ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে। ঐক্য ভেঙে গেলে ভারত দুর্বল হয়ে যাবে।
বুধবার কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে এসব মন্তব্য করেন মোদি। দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপির আদর্শিক সংস্থা আরএসএসের অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণের সুর স্পষ্টভাবে শোনা গেছে।
মোদি স্মরণ করান, গত ১৫ আগস্ট তিনি ডেমোগ্রাফিক মিশন ঘোষণা করেছিলেন ভারতীয় নাগরিকদের অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীরা দেশের যুব সমাজের কর্মসংস্থান কেড়ে নিচ্ছে এবং নারীদের উপর লক্ষ্যবস্তু করছে। এই কারণেই আমি ডেমোগ্রাফিক মিশনের ঘোষণা দিয়েছি, মন্তব্য করেন মোদি।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, স্বাধীনতা দিবসের মন্তব্যটি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি ইঙ্গিত করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসকে লক্ষ্য করে এই বক্তব্য দেন।
মোদির দাবি ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার প্রশাসন ভোটের স্বার্থে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকে সমর্থন করছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে, তা তাদের দায় নয়। তারা আরও বলেন, বিজেপি পরিকল্পিতভাবে অন্য দেশের নাগরিকদের নিয়ে বিদ্বেষ উস্কানি দিচ্ছে।
রাজ্যের নির্বাচনের প্রেক্ষিতে অবৈধ অনুপ্রবেশ ইতোমধ্যেই বড় রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠেছে। ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ শেষ হলে এই বিষয়টি আরও বিতর্কিত হতে পারে। একই ধরনের উদ্যোগের আগে বিহার প্রদেশে নেওয়া হয়েছিল, যা সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। আদালত কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেও ভোটার পরিচয়পত্র হিসেবে আধার কার্ড ব্যবহার করার নির্দেশ দেয়।
বিহারে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, সেখানে নেপাল, মিয়ানমার ও বাংলাদেশি নাগরিকরা ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার ঘটনা শনাক্ত হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টানা চতুর্থ দফায় ক্ষমতায় ফেরার জন্য লড়াই করছেন। রাজ্যে বিজেপি এবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান চ্যালেঞ্জার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি