
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ৩১তম কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্টের রিপাবলিকান প্রার্থী ভ্যালেন্টিনা গোমেজ কোরআনের একটি কপি আগুনে পুড়িয়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর দেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে তার কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, গোমেজ কোরআনে আগুন দেওয়ার আগে ইসলামকে টেক্সাস থেকে নির্মূল করার অঙ্গীকার করেন। যদিও বিভিন্ন সামাজিক প্ল্যাটফর্মে ভিডিওটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তবুও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের এক্সে এটি এখনও দেখা যাচ্ছে। এই কারণে ইলন মাস্কও সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
ভ্যালেন্টিনা গোমেজ ২০২৬ সালের নির্বাচনে টেক্সাসের ৩১তম কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্টে রিপাবলিকান হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতেই পবিত্র কোরআনে আগুন দেওয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তার ইসলামবিরোধী মন্তব্য এবং কোরআন পুড়িয়ে ফেলার ভিডিও নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওতে গোমেজ বলেন, ‘‘আমি টেক্সাসে ইসলামকে নির্মূল করবো। মুসলিমরা খ্রিষ্টান দেশগুলো দখল করতে ধর্ষণ ও হত্যা করছে।’’ তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করেন এবং মুসলিমদের সন্ত্রাসী আখ্যা দেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলিমদের বিশ্বের ৫৭টি মুসলিম দেশে চলে যাওয়ার আহ্বান জানান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তার কর্মকাণ্ডকে নিন্দা জানিয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘‘কোরআনে যিশু ও মেরির উল্লেখ রয়েছে, কেন আপনি তাদের অসম্মান করছেন?’’ অন্যরা বলছেন, তার কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত রিচার্ড গ্রেনেলও গোমেজের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘গোমেজ কোরআনে আগুন দেওয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীকে ঝুঁকিপূর্ণ করছেন।’’
গোমেজের এ কর্মকাণ্ড মার্কিন মুসলিম ও অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুনভাবে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ২০২৪ সালের গাজা সংকটের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমান ও আরব সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও সহিংসতার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
কলম্বিয়ায় জন্ম নেওয়া এই প্রার্থী তার রাজনৈতিক পরিচিতি মূলত মুসলমান, কৃষ্ণাঙ্গ ও অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে অর্জন করার চেষ্টা করেছেন। তবে এখনও তিনি রাজনীতিতে বড় কোনো সাফল্য পাননি।