
রাশিয়ার আগ্রাসনের তৃতীয় বর্ষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বড় পরিসরের মন্ত্রিসভা পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এতে প্রধানমন্ত্রী পদে আনা হয়েছে ৩৯ বছর বয়সী ইউলিয়া সভিরিডেঙ্কোকে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দেশটির সংসদ তাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন দেয়। তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহালের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
সভিরিডেঙ্কো এর আগে প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ছিল তার। ট্রাম্প-জেলেনস্কির মাঝে সম্পর্ক পুনঃউষ্ণ করতে এক গুরুত্বপূর্ণ খনিজ চুক্তিতে তার মধ্যস্থতার ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।
নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সভিরিডেঙ্কো জানিয়েছেন, তার মূল লক্ষ্য হবে ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা ও অর্থনৈতিক ভিত্তি জোরদার করা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, "আমরা এমন একটি ইউক্রেন গড়তে চাই, যা নিজস্ব সামর্থ্যে দাঁড়াতে পারে—সামরিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে। যুদ্ধের সময় দেরির সুযোগ নেই, আমাদের দ্রুত ও কার্যকরভাবে এগোতে হবে।"
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহালকে নতুন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এমন এক সময় যখন মন্ত্রণালয়টি দুর্নীতির অভিযোগে সমালোচিত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই সিবিয়া তার দায়িত্বে বহাল থাকছেন। তবে আইনমন্ত্রী ওলগা স্টেফানিশিনাকে যুক্তরাষ্ট্রে ইউক্রেনের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে—যার জন্য ওয়াশিংটনের অনুমোদন প্রয়োজন।
এছাড়া, অলেক্সেই সোবোলেভ অর্থ, পরিবেশ ও কৃষিমন্ত্রী হিসেবে এবং তারাস কাচকা ইউরোপীয় ইন্টিগ্রেশনের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।
তবে এই পরিবর্তন নিয়ে কিছু সমালোচনাও উঠে এসেছে। সমালোচকদের মতে, নতুন নিয়োগে মুখগুলো নতুন না হয়ে বরং জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠদেরই পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে, যা প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা আরও কেন্দ্রীভূত করতে পারে। তবুও সরকার বলছে, এই রদবদলের মাধ্যমে দেশকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যাবে।