
পাকিস্তানের জামায়াত নেতা ও সাবেক সিনেটর মুশতাক আহমদ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হাতে আটক থাকার এক সপ্তাহের পর মুক্তি পেয়েছেন। মঙ্গলবার পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি বর্তমানে নিরাপদে আছেন এবং জর্ডানের রাজধানী আম্মানে পাকিস্তান দূতাবাসে অবস্থান করছেন।
ইসহাক দার তার এক্স-এ দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, "আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে সাবেক সিনেটর মুশতাক আহমদকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন নিরাপদে পাকিস্তান দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে আছেন। তার শারীরিক অবস্থা ভালো এবং তিনি মনোবল ধরে রেখেছেন। দূতাবাস তার ইচ্ছা ও সুবিধামতো দেশে ফেরার ব্যবস্থা করবে।"
উপপ্রধানমন্ত্রী আরও জানান, মুশতাক আহমদের মুক্তি নিশ্চিত করতে যেসব বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ সহযোগিতা করেছে, পাকিস্তান তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
গাজার মানবিক ফ্লোটিলায় অংশগ্রহণ
মুশতাক আহমদ ছিলেন গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একজন সদস্য। এই বহরটি গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে গত মাসে স্পেন থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। বহরে মোট ৪৫টি জাহাজ ছিল, যেখানে বিভিন্ন দেশের কর্মী, রাজনীতিক ও মানবাধিকারকর্মীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। তবে গত সপ্তাহে ইসরায়েলি বাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমায় ফ্লোটিলাকে আটক করে এবং অংশগ্রহণকারীদের আটক করে রাখে।
জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই সতর্ক করেছে, গাজায় খাদ্যসংকট ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই সংকট মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে মানবিক কর্মীরা ফ্লোটিলায় অংশগ্রহণ করেন।
ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের অভিযোগ
মুক্তির পর মুশতাক আহমদ এক ভিডিওবার্তায় জানান, আটক অবস্থায় তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল। তিনি বলেন, "আমাদের চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল, বন্দুক তাক করা হয়েছিল মাথায়। আমি অনশন ধর্মঘটে গিয়েছিলাম। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আমাদের ভালো পরিবেশ, বিশুদ্ধ পানি কিংবা ওষুধ কিছুই দেয়নি।"
তিনি জানিয়েছেন, তাকে রাখা হয়েছিল নেগেভ মরুভূমির উচ্চ নিরাপত্তার কারাগার কেটজিওট (আনসার–৩)-এ, যেখানে অধিকাংশ ফিলিস্তিনি বন্দিকে রাখা হয়।
মুশতাক আহমদ আরও বলেছেন, তিনি শিগগিরই পাকিস্তানে ফিরে যাবেন এবং বন্দিত্বের বিস্তারিত অভিজ্ঞতা দেশবাসীর সঙ্গে ভাগ করবেন। তিনি বলেন, "ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার সংগ্রাম আমরা অব্যাহত রাখব।"