
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাম্প্রতিক ট্যারিফ আলোচনায় ২০ শতাংশ শুল্ক নিশ্চিত করা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর ফার্মগেটে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ও ট্রাম্পের শুল্ক: বাণিজ্য ব্যবস্থা পরবর্তী বিশ্বের অর্থনৈতিক কূটনীতি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি বলেন, এই আলোচনাই ছিল সরকারের অন্যতম বড় পররাষ্ট্রনীতি-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ। তবে সঠিক প্রস্তুতি ও আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করেছে।
বাংলাদেশ রিসার্চ এনালাইসিস এন্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (ব্রেইন) এই আলোচনা আয়োজন করে। শফিকুল আলম বলেন, “অনেকে বলেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকার অভিজ্ঞতা ও শক্তি রাখে না, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ভালো চুক্তি আনতে পারবে না। কিন্তু আমরা প্রমাণ করেছি, সঠিক প্রস্তুতি ও আত্মবিশ্বাস থাকলে অন্তর্বর্তী সরকারও বড় সাফল্য অর্জন করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, শুরু থেকেই সরকারের লক্ষ্য ছিল বাস্তবসম্মত এবং দ্রুত ফল আনা সম্ভব এমন ক্ষেত্রে মনোযোগ দেওয়া। আমরা জানতাম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো চুক্তি সম্ভব, বলেন তিনি।
শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গা ইস্যু ও যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ নীতি দুই ক্ষেত্রেই বাংলাদেশকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিবেশী দেশের গণমাধ্যম থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার হলেও বাংলাদেশ সঠিক কূটনৈতিক প্রস্তুতির মাধ্যমে তা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি জানান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান যুক্তরাষ্ট্র সফর করে বুঝতে পারেন যে ট্রাম্প প্রশাসন বৈশ্বিক ঐকমত্য থেকে সরে গিয়ে স্বতন্ত্র অবস্থান নিচ্ছে। এরপর বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়।
গোলটেবিল আলোচনার পেছনে তিনটি মূল শক্তির অবদানকে গুরুত্ব দিয়ে শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা, ড. খলিলুর রহমানের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের বৈশ্বিক বাজার বিষয়ে জ্ঞান।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সুবিধা হলো বৈশ্বিক বাজারে দেশের অবস্থান, বিশেষ করে কটন, তেল, পোল্ট্রি ফিড ও ভোজ্যতেলের মতো ক্ষেত্রে। আমরা এই অবস্থানকে আলোচনায় লেভারেজ হিসেবে ব্যবহার করেছি।
শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারেও বাংলাদেশের রপ্তানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও দক্ষ করে তোলা ও সরবরাহ ব্যবস্থার সংস্কার বিদেশি বিনিয়োগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে মূল্যস্ফীতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে এবং অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি খারাপ কিছু নয়, যোগ করেন শফিকুল আলম।