
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছেন, গত তিন দশকে বিভিন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে পুতিন “বোকা বানালেও” তার সঙ্গে সে কৌশল কাজ করেনি। সোমবার ওভাল অফিসে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট্টের সঙ্গে বৈঠকে এই মন্তব্য করেন তিনি, খবর তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড-এর।
ট্রাম্প বলেন, “পুতিন একে একে ক্লিনটন, বুশ, ওবামা, বাইডেন সবাইকে ঠকিয়েছেন। তবে এবার তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। আমি এমনটা হতে দিইনি।”
ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানে প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হওয়ায় রুশ প্রেসিডেন্টের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তিনি জানান, “দুই মাস আগেও আমি বিশ্বাস করতাম ইউক্রেন নিয়ে একটি চুক্তি হবে। কিন্তু পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।”
ট্রাম্প সরাসরি ঘোষণা দেন আগামী ৫০ দিনের মধ্যে চুক্তি না হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপসহ কঠোর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “শুধু কথায় কাজ হয় না। কখনও কখনও শক্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়।”
তিনি আরও বলেন, “রাশিয়া অনেক সম্ভাবনার দেশ। আশা করবো পুতিন তা বুঝবেন এবং আলোচনা শুরু করবেন।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ট্রাম্প আবারও সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেই দায়ী করে বলেন, “এই যুদ্ধ আমার নয়, এটা বাইডেনের যুদ্ধ। আমি সবার জন্য একটা সমাধান চাই।”
এদিনের বৈঠকে ট্রাম্প ও রুট্টে যৌথভাবে ঘোষণা দেন, ন্যাটো সদস্য দেশগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনে ইউক্রেনকে সহায়তা করবে। এই সহযোগিতায় প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম থাকবে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে জার্মানি, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন এবং যুক্তরাজ্য।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুর দিকে পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা দেখা গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা উল্টো সুরে মোড় নিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউসে ডেকে সমালোচনা করায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয় কিয়েভকে ‘বিকিয়ে’ দেওয়া হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
এদিকে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আরও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোয় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। এর পাল্টা হিসেবে ইউক্রেনও রাশিয়ার মূল ভূখণ্ড ও মস্কো-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে প্রতিরোধমূলক হামলা জোরদার করেছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া বার্তা এবং ন্যাটোর সমন্বিত পদক্ষেপ যুদ্ধ পরিস্থিতিকে একটি নতুন মোড় দিতে পারে।