
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রতিক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। সংগঠনটি বলছে, শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অরাজকতা ছড়িয়ে পড়লে তাতে দেশের শত্রুরাই লাভবান হবে।
শুক্রবার ১৯ ডিসেম্বর ভোরে শরিফ ওসমান হাদির নিজ হাতে গড়া সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই আহ্বান জানানো হয়। পোস্টে বলা হয়, “ওসমান হাদিকে যারা খুন করেছে তাদের হাতে দেশকে তুলে দিয়েন না। ভাঙচুর আর আগুন সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে তারা মূলত বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তারা এই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করতে চায়। ৩২ আর ৩৬ এক জিনিস না, এইটা আপনাদের বুঝতে হবে।”
একই পোস্টে আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্রের আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করা হয়। সেখানে বলা হয়, “আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারলে কার কার লাভ সেটা একবার ভেবে দেখুন! এই মুহূর্তে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি অভয়ারণ্য, নিয়ন্ত্রণহীন রাষ্ট্র হিসেবে পোট্রে করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যার কোন সুফল নাই, উল্টো দীর্ঘমেয়াদি দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে যাচ্ছি আমরা।”
দেশের শত্রু চিহ্নিত করে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে পোস্টে আরও লেখা হয়, “ওসমান হাদি তার এক্টিভিজম, তার রাজনীতির পুরোটা সময় জুড়ে আপনাদেরকে সার্বভৌমত্বের শত্রু চিনিয়েছেন, সেইসঙ্গে তাকে মোকাবিলা করার পথও বাতলে দিয়েছেন। আমাদের সামনে দীর্ঘ লড়াই, এটাকে কোনোভাবেই দুই একদিনে হাসিল করা সম্ভব না। বাংলাদেশকে স্থিতিশীল রাখতে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করুন, সহিংসতা পরিহার করুন।”
এদিকে ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে দেওয়া আরেকটি পোস্টে দেশের সাধারণ জনগণকে সব ধরনের সহিংসতা থেকে দূরে থাকার অনুরোধ জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, “ওসমান হাদি তার শত্রুর সঙ্গেও আমৃত্যু ইনসাফ চেয়েছেন, বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই করতে চেয়েছেন। যিনি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য নিজের জীবনটা পর্যন্ত বিলিয়ে দিয়েছেন, তাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনোভাবেই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন না হয়, সেদিকে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখবার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। যারা এই ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে তাদেরকে সন্দেহের চোখে দেখুন। কোনোভাবেই দেশকে অকার্যকর হতে দেয়া যাবে না।”
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ১৮ ডিসেম্বর রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে। এর পরপরই তার অনুসারী এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানাতে সড়কে নেমে আসেন। এই বিক্ষোভের মধ্যে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে সবাইকে সংযম বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন।