
গাইবান্ধার সাঘাটায় শিবির নেতা সিজু মিয়া হত্যা মামলায় সাঘাটা থানার ওসিসহ ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের করেছেন নিহতের মা রিক্তা বেগম, যিনি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিজুর মামা শাহালম মিয়া।
শাহালম মিয়ার ভাষ্য, “সাঘাটা থানায় মামলা গ্রহণ না হওয়ায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছি। আদালতের বিচারক পাঁপড়ি বড়ুয়া সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
মামলায় আসামি হিসেবে রয়েছেন— ওসি বাদশা আলম, এএসআই রাকিবুল ইসলাম, এসআই মশিউর, এএসআই মহসিন আলী সরকার, এএসআই আহসান হাবিব, এএসআই উজ্জল, এএসআই লিটন মিয়া (ডিউটি অফিসার), হামিদুল ইসলাম, আজাদুল ইসলাম, নয়ন চন্দ্র, জয় চন্দ্র, ধর্মচন্দ্র বর্মণ, সাব্বির হোসেন, ইউসুফ আলী ও মমিনুল ইসলাম। এছাড়াও আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মামলায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রতন চন্দ্র শর্মা, ডুবুরি আবুল কালাম আজাদ, ফায়ার ফাইটার জিয়াউর রহমানসহ ১৬ জনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সিজু মিয়া, যিনি গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামের দিনমজুর দুলাল মিয়ার ছেলে, এবং শিবিরের ইউনিয়ন সভাপতি ও কলেজছাত্র, তাকে পরিকল্পিতভাবে থানায় ডেকে নিয়ে লাঠি ও বন্দুকের বাট দিয়ে নৃশংসভাবে আহত করা হয়। পরে তাঁকে থানার পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সিজু পুকুর থেকে সাঁতরে বাঁচার চেষ্টা করলে আসামিরা বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ এই ঘটনা ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।
গাইবান্ধা জেলা শিবির সভাপতি ফেরদাউস সরকার রুম্মান বলেন, “সাঘাটা থানায় মামলা না নেওয়ায় আমরা আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা চাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হোক।”
নিহতের মা রিক্তা বেগম বলেন, “আমার সন্তানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিচার পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। আমি চাই, হত্যাকারীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাক।”
অভিযুক্ত ওসি বাদশা আলমের সরকারি নম্বরে কল করলে ফোন রিসিভ করেন এসআই মশিউর রহমান, তিনি বলেন, “স্যার স্বাক্ষী দিতে গেছেন। আমাদের নামে মামলা হয়েছে। অপরাধী শনাক্ত হলে শাস্তি মেনে নেব।”
মামলার স্বাক্ষী রতন চন্দ্র শর্মা জানান, “মামলা তদন্তাধীন, তাই এখন মন্তব্য করা সম্ভব নয়।”
পুলিশের পক্ষ থেকে উপ-পরিদর্শক এমতাজুল ইসলাম বলেন, “আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছে এবং সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।”