
দেশে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন আজ (বুধবার) পিলখানায় বিজিবির পাঁচটি ব্যাটালিয়নের নির্বাচন কেন্দ্রিক মক এক্সারসাইজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সিইসি বলেন, "আজ এখানে খুব সুন্দর একটি মহড়া দেখলাম। এটি পুরোপুরি আমাদের নির্বাচনী সংস্কৃতি বিবেচনায় করা হয়েছে। সাধারণত নির্বাচনে যেসব ধরনের ঘটনা ঘটে বা যে ভাবে নির্বাচন পরিচালিত হয়, সব কনসিভেবল ডাইমেনশন মাথায় রেখে বিজিবি প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।"
তিনি আরও জানান, নির্বাচনী ডিউটি নিয়মিত আসে না। ৪ থেকে ৫ বছর পরপর এ দায়িত্ব আসে, তাই বাহিনীগুলোকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হয়। বিজিবির মূল কাজ সীমান্তে হলেও পুলিশ ১৩০টি কেন্দ্রে নির্বাচনভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আনসার-বিডিবিও মহড়ায় অংশ নিয়েছে এবং প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। "বিজিবির এ অনুশীলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যাতে তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। সে জন্য সদস্যদের তৈরি করছে।"
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সদস্যদের দায়িত্বশীলতার সঙ্গে প্রস্তুত করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই প্রশিক্ষণ নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। "আমি আশা করি সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিক এবং ১৩ কোটি ভোটার মিলে আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অর্জন করবো।"
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি নিখুঁত নয়। তবে ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পরিস্থিতির তুলনায় এখন অনেক উন্নতি হয়েছে। মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারছেন। ভোটের তারিখের দিকে এ পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে। ৩০ তারিখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে পুনরায় বৈঠক হবে, যেখানে ডেপ্লয়মেন্ট স্ট্র্যাটেজি চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, পুলিশ চাইলে একজন বা দুজন সদস্য মোতায়েন করা যায়, কিন্তু সেনাবাহিনী কন্টিনজেন্ট আকারে কাজ করে। তাই তাদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত সাবধানে নেওয়া হবে।
একটি দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের প্রতিহতের ঘোষণার প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, "যারা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে, তাদের ব্যাপারে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিক, ভোটার, দেশবাসী; সবাই মিলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি প্রতিহত করতে হবে।"
সরকারের উপদেষ্টাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নিয়ে তিনি জানান, এটি সরকারের নীতি-নির্ধারণী বিষয়। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করবে।
ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র নিয়ে তিনি বলেন, আমরা ঝুঁকি অ্যাসেসমেন্ট করেছি এবং রেড, ইয়েলো ও গ্রিন; এই তিন জোনে বাহিনী মোতায়ন করা হবে।
এদিকে বিজিবি জানিয়েছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ১২১০ প্লাটুন সদস্য নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে। সন্দীপ, হাতিয়া ও কুতুবদিয়া ব্যতীত সব উপজেলায় বিজিবি দায়িত্ব নেবে। সীমান্তবর্তী ১১৫টি উপজেলার মধ্যে ৬০টিতে তারা এককভাবে নির্বাচনী কাজ করবে।
মক এক্সারসাইজ অনুষ্ঠানে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।