
অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখার দুটি ভল্টে শুধু ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নন, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ পরিবারের আরও কয়েক সদস্যের স্বর্ণালংকারও সংরক্ষিত ছিল দুদকের সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ভল্ট থেকে উদ্ধার করা নথি ও হিসাবপত্র পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে জব্দ হওয়া স্বর্ণের একটি অংশ শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সম্পদ, আর কিছু অংশ তার বোন ও মেয়ের মালিকানাধীন।
দুদকের মহাপরিচালক বলেন, ‘স্বর্ণালংকারগুলো আলাদা আলাদাভাবে মার্কিং করা ছিল। আমাদের অনুসন্ধানকারী দলের কর্মকর্তারা এখন স্বর্ণালংকারগুলো আলাদা করবেন। কার কোন অংশটুকু আছে, তা নির্ধারণ করা হবে।’
তিনি আরও জানান, কোন অংশটি অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং কোনটি নয়—তা পৃথকভাবে যাচাই করা হবে। কিছু অংশ পরবর্তী সময়ে অন্য অনুসন্ধানের আওতাতেও আসতে পারে।
৮৩২ ভরি স্বর্ণের মধ্যে ঠিক কতটুকু শেখ হাসিনার—এমন প্রশ্নে আক্তার হোসেন বলেন, ‘সেই অংশটুকু নির্ধারণ করার জন্যই ইনভেন্ট্রি করা হয়েছে এবং তার যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন তার সঙ্গে মিলিয়ে যাচাই করে তার অংশটুকু নির্ধারণ করা হবে। তার জন্যই এত কার্যক্রম।’
স্বর্ণ বৈধ না অবৈধ—এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সম্পদ বিবরণী যাচাই করলে জানা যাবে স্বর্ণগুলো জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কি না।’
আয়ের উৎস অস্পষ্ট বা ঘোষিত আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকলে এগুলো অবৈধ সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
শেখ হাসিনার সম্পদ বাজেয়াপ্তের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনার আলোকে স্বর্ণ জব্দ করা হবে কি না—এ বিষয়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘সেটা ভিন্ন জিনিস। আদালতের একটা আলাদা আদেশ রয়েছে। তবে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও বিধির আলোকে আমাদের অনুসন্ধান দল এই কার্যক্রম ঠিক করে আদালতের অনুমতিক্রমে যে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে, সেই অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
দুদক জানায়, লকারে থাকা বর্ণনা ও সংযুক্ত চিরকুট অনুযায়ী উদ্ধার হওয়া স্বর্ণালংকারগুলো শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা সিদ্দিকী, সাইমা ওয়াজেদ পুতুল, সজীব ওয়াজেদ জয় ও ববি—এই পরিবারের সদস্যদের বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিক তালিকা তৈরির পর স্বর্ণালংকার সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপকদের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।