
দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর পর দেশে ফিরে দেশে আসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশে পৌঁছানোর পর প্রথমেই তিনি অসুস্থ মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান, যেখানে বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালের উদ্দেশে যাত্রা করার আগে পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় নেতাকর্মীদের দেওয়া সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৫টা ৫২ মিনিটে তারেক রহমান হাসপাতাল পৌঁছান। এসময় তার সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। হাসপাতালের আগে ডা. জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানও সেখানে পৌঁছান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, “প্রিয় ভাই-বোনেরা, সন্তান হিসেবে আমার মন আমার মায়ের বিছানার পাশে পড়ে আছে, সেই হাসপাতালের ঘরে। কিন্তু সেই মানুষটি যাদের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন—অর্থাৎ আপনারা—এই মানুষগুলোকে আমি কোনোভাবেই ফেলে যেতে পারি না। সেজন্যই আজ হাসপাতাল যাওয়ার আগে আপনাদের প্রতি এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে যারা আমাকে দেখছেন, তাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাতে আমি এখানে দাঁড়িয়েছি।”
তারেক রহমানের আগমনকে ঘিরে সকাল থেকেই হাসপাতালের গেটের বাইরে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে তারেক রহমানকে বহন করা গাড়ি হাসপাতালে প্রবেশ করার সময় নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায়। এসময় দলীয় পতাকা ও ফেস্টুন নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা, যদিও হাসপাতালে স্লোগান দিতে দলের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
এর আগে, তারেক রহমানকে বহনকারী বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার (বিজি-২০২) উড়োজাহাজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রথমে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে একে একে আলিঙ্গন করেন। উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ও করেন তিনি।
পরে তারেক রহমানকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন তার শাশুড়ি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান এবং দেশে থাকা পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
উল্লেখ্য, তারেক রহমানকে বহনকারী উড়োজাহাজটি বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। পরে এটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। কিছু সময় যাত্রাবিরতি নিয়ে সকাল ১১টা ১২ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে পুনরায় যাত্রা শুরু করে।