
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল জোরপূর্বক নিজেদের দাবি আদায় করতে চায়, যা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি সতর্ক করে বলেন, “নিজেদের দাবি অন্য দলের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা ঠিক নয়।”
শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ট্রেইস কনসাল্টিং লিমিটেডের আয়োজিত ‘জনতার ইশতেহার’ শীর্ষক সংলাপে খসরু এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে ইশতেহার আসাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভোটের আগে সব দলই তৎপর থাকে, এবং মানুষ ইশতেহার দেখে ভোট দেয় কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন। তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘ আলোচনার পর ঐকমত্যের মাধ্যমে সনদ সই হয়েছে। বাস্তবায়নও ঐকমত্যের মাধ্যমে হতে হবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে আসলে ঐকমত্যকে সম্মান করতে হবে। এর বাইরে গিয়ে নতুন ইস্যু তৈরি করলে ঐকমত্যকে সম্মান দেওয়া হচ্ছে না।”
খসরু আরও সতর্ক করে বলেন, যারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায় বা বাধা সৃষ্টি করতে চায়, তারা কি এমন ঘটনা ঘটাতে চাইছে? নানা ঘটনা ঘটিয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা হচ্ছে কি না তা খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি গণতন্ত্রের মূল বিষয় হিসেবে আলোচনা অব্যাহত রাখা এবং জনগণের কথা শোনা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ৮ বছর আগে বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ উপস্থাপন করেছিলেন, পরে বিএনপি ২৭ দফা এবং ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের প্রস্তাবনাকে মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে।
খসরু বলেন, ক্ষমতায় এলে দেড় বছরের মধ্যে এক কোটি মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করবে বিএনপি। চাকরির পরিকল্পনা ইতোমধ্যে প্রস্তুত, পাশাপাশি নতুন অর্থনৈতিক মডেল চালু করার বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সংলাপে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, জামায়েতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি সাইফুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব মো. আকতার হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য জেসমিন তুলি এবং বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মাদ হাতেম।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ট্রেইস কনসাল্টিং লিমিটেডের সিইও ফুয়াদ মোহাম্মদ খালেদ হাসান। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহার ঘোষণায় চারটি প্রধান দুর্বলতা লক্ষ্য করা যায়— জনগণের সরাসরি মতামত না নেওয়া, পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলোর আসনের জন্য নির্দিষ্ট সুবিধা না রাখা, ব্যবসায়িক ও কৃষি অঞ্চলের প্রাধান্য না দেওয়া এবং প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন কম হওয়া।
ফুয়াদ খালেদ হাসান রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে এই দুর্বলতাগুলো গুরুত্ব দিয়ে ইশতেহার ঘোষণা ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।