
মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিধর প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যে গত ১৩ জুন একটি আকস্মিক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই হামলায় আমেরিকার অনুমোদন নিয়ে ইরানের ঘুমন্ত জনগণের ওপর আঘাত হানে নেতানিয়াহুর বাহিনী। এই হামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন ভেঙে ফেলে ইসরায়েল, এমনকি অবৈধভাবে ইরাকের আকাশসীমাও ব্যবহার করে, যা নিয়ে চরম ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বাগদাদ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালানো আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ হলেও তা অগ্রাহ্য করে ইসরায়েল হামলা চালায়। ইরাকের আকাশপথ ব্যবহার করায় দেশটির সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ হয়েছে বলেও মনে করছে বাগদাদ।
বিবিসি ফার্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শাইইয়া আল-সুদানি বলেন, তার দেশের পক্ষে ইসরায়েলের আগ্রাসনের জবাব দেওয়া সম্ভব হয়নি, কারণ তাদের কাছে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি নেই। তিনি জানান, আগেও রাশিয়া থেকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার চেষ্টা করেছিল ইরাক, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তিতে সেই উদ্যোগ থমকে যায়।
আল-সুদানি আরও বলেন, ইসরায়েল যদি মনে করে এই ধরনের হামলা চালিয়ে ইরানে সরকার পরিবর্তন সম্ভব, তবে তারা ভুল করছে। ইরানের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এমন সময়ে সরকারবিরোধীরাও দেশের শাসকদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায়, যা ইরানের জাতীয় পরিচয়ের শক্ত অংশ।
ইতোমধ্যে ইরাক সরকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশটির পার্লামেন্টের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কমিটির প্রধান করিম আলিউয়ি আল মোহাম্মাদাউয়ি জানিয়েছেন, আকাশসীমা লঙ্ঘনের প্রতিবাদে বাগদাদ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছে। পাশাপাশি কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।