
নির্বাচনী ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে জনগণের কাছ থেকে সরাসরি অনুদান চেয়েছেন ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তিনি নিজের বিকাশ পার্সোনাল নম্বর ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রকাশ করে তহবিল সংগ্রহের আহ্বান জানান।
ওই পোস্টের পর আরেকটি পোস্টে তাসনিম জারা জানান, মাত্র সাত ঘণ্টায় তিনি ১২ লাখ টাকারও বেশি অনুদান পেয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘মাত্র ৭ ঘণ্টায় আপনারা ১২ লাখ টাকারও বেশি পাঠিয়েছেন। এতটা অভূতপূর্বভাবে আপনারা পাশে দাঁড়াবেন, তা সত্যিই আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল। আপনাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।’

তিনি আরও জানান, তার মোট লক্ষ্যমাত্রা ৪৬,৯৩,৫৮০ টাকা। তবে ৩৪ লাখ টাকা সংগ্রহ সম্পন্ন হলেই ফান্ডরেইজিং বন্ধ করে দেবেন বলে উল্লেখ করেন।
এর আগে দেওয়া আরেক পোস্টে তাসনিম জারা জানান, বিকাশে একদিনে সর্বোচ্চ লেনদেনের সীমা অতিক্রম হয়ে যাওয়ায় ওই মাধ্যমে সেদিন আর টাকা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে বিকল্প মাধ্যমে অনুদান পাঠানোর অনুরোধ জানান তিনি। অনুদান চেয়ে প্রথম পোস্ট দেওয়ার চার ঘণ্টা পর তিনি জানিয়েছিলেন, তখন পর্যন্ত তার কাছে ৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা পৌঁছেছে।
প্রথম পোস্টে নির্বাচনী ব্যয়ের প্রসঙ্গে তাসনিম জারা লিখেন, ‘নির্বাচনে একজন প্রার্থী আইনগতভাবে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ বা ভোটার প্রতি ১০ টাকা খরচ করতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে শোনা যায় একেকজন একজন প্রার্থী ২০ থেকে ৫০ কোটি টাকা খরচ করেন। অথচ নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে বলেন মাত্র পঁচিশ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। ফলে প্রায় সকলের সংসদে যাওয়ার যাত্রাটা শুরু হয় আইন ভাঙা ও মিথ্যা বলার মাধ্যমে।’
তিনি আরও লিখেন, ‘আমি এ অসততা ও মিথ্যার রাজনীতি করবো না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে, আইনে অনুমোদিত টাকার বাইরে আমি এক টাকাও খরচ করবো না। অনেকে বলেছেন, এত অল্প বাজেটে নির্বাচন করা অসম্ভব। আমি তাদের বলেছি, নতুন বাংলাদেশ গড়তে অন্য উপায় নেই।’
নির্বাচনী ব্যয়ের উচ্চ অঙ্ক নিয়ে তিনি লেখেন, ‘নির্বাচনের খরচ যখন ১০ কোটি বা ২০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় তখন সেই টাকা তোলার জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর চাঁদাবাজি আর টেন্ডারবাজি করাটা তাদের জন্য ‘বাধ্যতামূলক’ হয়ে দাঁড়ায়। এভাবেই রাজনীতিটা সাধারণ মানুষের হাত থেকে ছিনতাই হয়ে মুষ্টিমেয় কিছু সিন্ডিকেটের হাতে চলে যায়।’
এনসিপির এই প্রার্থী আরও লিখেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী এ নির্বাচনে আমি মোট ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮০ টাকা ব্যয় করতে পারবো। আমি এ টাকাটা আপনাদের কাছ থেকে চাই।’
শেষে তিনি বলেন, ‘আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বিকাশ নম্বর দিচ্ছি। এগুলো একদম নতুন অ্যাকাউন্ট। কত টাকা আসছে আর কত খরচ হচ্ছে, প্রতিটি টাকার হিসাব আমি স্বচ্ছভাবে আপনাদের সামনে প্রকাশ করবো, প্রমাণসহ।’