
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়া এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে। কম্বোডিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী সান চানথোল এ তথ্য সম্প্রতি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে একই পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন।
উপপ্রধানমন্ত্রী সান চানথোল বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পদে আসার পর বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার অবদানকে স্বীকৃতি জানিয়ে তাকে এই বছরের নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।” উল্লেখযোগ্য, আগে এই মনোনয়ন ব্যক্তিগত উদ্যোগে হলেও, এটি প্রথমবার কোনো সার্বভৌম রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়ন।
শুক্রবার নমপেনের সংবাদ সম্মেলনে সান চানথোল আরও বলেন, “মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আহ্বান এবং তৎপরতার কারণে গত সপ্তাহে মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় থাইল্যান্ড ও আমাদের দেশের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব মিটেছে। তিনি (ট্রাম্প) নোবেল পুরস্কারের জন্য যোগ্য।”
জুন মাসে জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সংকট নিরসনে ট্রাম্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দুই দেশের যুদ্ধবিরতির দুই সপ্তাহ পর, পাকিস্তানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং দেশে ফিরে ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন।
তার আগে জুলাই মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে একই পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেন।
সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি আব্রাহাম অ্যাকর্ড, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি উদ্যোগে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছি। আমি জানি এই কারণেই নোবেল পুরস্কার পাবো না—তবে মানুষ দেখছে আমি কী করেছি এবং করছি। এটাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় সম্মান।”
নোবেল মনোনয়ন প্রক্রিয়া:
বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানিত পুরস্কার নোবেলের প্রার্থী বাছাই নরওয়ের নোবেল কমিটির দায়িত্বে। এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ গোপনীয়। বিভিন্ন দেশের আইনজীবী, অধ্যাপক, সাবেক পুরস্কারজয়ী, রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার দায়িত্বশীলরা মনোনয়ন জমা দেন। তবে প্রার্থী নিজে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন না।
প্রাথমিক যাচাই শেষে কমিটি মনোনয়নগুলো নরওয়ের পার্লামেন্টে পাঠায়। সেখানে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই করে শর্টলিস্ট তৈরি করে, যা নিয়ে পার্লামেন্টে গণভোট হয়। এভাবেই চূড়ান্ত বিজয়ী নির্ধারিত হয়।
প্রতি বছর অক্টোবর মাসে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয় এবং ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
সূত্র: এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড