
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন এ সপ্তাহে তার কিশোরী কন্যাকে নিয়ে বেইজিং সফর করেছেন। এটিই তার প্রথম বিদেশ সফর এবং জনসম্মুখে উপস্থিতি, যা দেশটির সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী নিয়ে নতুন করে জল্পনা-কল্পনা তৈরি করেছে।
যদিও পিয়ংইয়ং কখনো তার নাম বা বয়স প্রকাশ করেনি, দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার দাবি— মেয়েটির নাম কিম জু এয়ে। আনুমানিক ১৩ বছর বয়সী এ কিশোরীকে বাবার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়, যখন কিম জং উন সাঁজোয়া ট্রেন থেকে নেমে চীনের রাজধানীতে প্রবেশ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি উপলক্ষে জাপানের আত্মসমর্পণ স্মরণে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে বুধবার কিম অংশ নেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল ম্যাডেন বলেন, “এই মুহূর্তে, জু এয়ে উত্তর কোরিয়ার পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে সবার আগে আছেন। তিনি ব্যবহারিক প্রোটোকল অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন।”
তিনি আরও বলেন, “এটাই প্রথমবার, যখন সে কিম জং উনের সঙ্গে বিদেশ সফরে গিয়েছে। এমন অভিজ্ঞতা কিমের বাবা কিংবা প্রভাবশালী খালাও পাননি।” ম্যাডেনের মতে, বিদেশি নেতৃত্ব ও অভিজাতদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় তার ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান অভিজ্ঞতা তৈরি করবে।
ইতিহাসবিদরা বলছেন, কিম জং উন কখনো তার বাবা কিম জং ইলের সঙ্গে বিদেশ সফরে যাননি। তবে কিম জং ইল ১৯৫০-এর দশকে তার বাবা, উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং-এর সঙ্গে বিদেশ সফরে অংশ নিয়েছিলেন।
প্রথমবার ২০২২ সালে জু এয়ে জনসমক্ষে আসেন, যখন তাকে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সময় বাবার পাশে দেখা যায়। তার আগে কিম জং উনের সন্তানদের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ হয়নি। এখনো পর্যন্ত পরিবারের অন্য সন্তানদের সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা, জু এয়ে-ই সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তরসূরি। তবে পুরুষ-প্রধান শাসনব্যবস্থায় তিনি শীর্ষস্থানে আসতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে।
সম্প্রতি তিনি দেশের ভেতরেও উচ্চপ্রোফাইল নানা আয়োজনে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে অন্যতম মে মাসে রাশিয়ান দূতাবাসে এক অনুষ্ঠানে তার কূটনৈতিক আত্মপ্রকাশ।
স্টিমসন সেন্টারের আরেক গবেষক র্যাচেল মিনইয়ং লি বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে জু এয়ে-র জনসমক্ষে উপস্থিতি সামরিক-সম্পর্কিত অনুষ্ঠান থেকে বিস্তৃত হয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আয়োজনেও ছড়িয়ে পড়েছে।”