
খাগড়াছড়িতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংসতা এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ, যেখানে নাম উল্লেখ না করে এক হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। গুইমারা ও সদর উপজেলায় পৃথক ঘটনায় দায়ের হওয়া এসব মামলায় হত্যার পাশাপাশি ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা ও ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে দাঙ্গা সৃষ্টি করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গুইমারা থানায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার মধ্যে একটিতে অজ্ঞাত শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে, অন্য মামলায় সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। খাগড়াছড়ি সদর থানায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযুক্তের সংখ্যা আরও বেশি; প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ জন, যাদের কেউই সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত নয়।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী জানান, “গত ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গুইমারায় ১৪৪ ধারা অমান্য করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।” ওই ঘটনার পরদিন ধানক্ষেত থেকে তিন ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যাদের মৃত্যু হত্যা বলেই সন্দেহ করছে পুলিশ। নিহতদের পরিবার থেকে কেউ মামলা না করায় গুইমারা থানার এসআই সোহেল রানা নিজেই বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন।
এর একদিন আগে, ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় মহাজনপাড়া, স্বনির্ভর ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওইদিনও ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে আসে বিক্ষোভকারীরা। খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, “ওই ঘটনায় সাত থেকে আটশ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা রুজু করা হয়েছে।”
পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, “গুইমারায় নিহতদের পরিবার বা সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের কেউ মামলা করেনি। ফলে তিনটি মামলাই পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করেছে।”
এই উত্তেজনার সূচনা হয় ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে, যখন এক মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে জুম্ম ছাত্র-জনতা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এরপর থেকেই খাগড়াছড়িতে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। যদিও পরে তিন সদস্যের চিকিৎসক দল কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পায়নি।