
সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মি আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা গুলশান থানার মামলায় আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বহিষ্কৃত নেতা আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ।
সোমবার (৪ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম মো. সেফাতুল্লাহর আদালতে রিয়াদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। আদালতে হাজির করা চার আসামির মধ্যে একমাত্র রিয়াদ স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেছুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন।
জবানবন্দিতে রিয়াদ জানান, পুলিশের বিভিন্ন অভিযানে তিনি সহায়তা করেছেন। ১৭ জুলাই রাতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সহসভাপতি জাকির হোসেন মঞ্জুর ফোনে গুলশান বিভাগের ডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে সাবেক এমপি শাম্মির অবস্থান জানানো হয়। পরে ওসির নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে অভিযানে যান তারা। তবে শাম্মি আহমেদকে বাসায় না পেয়ে ভোরে ফিরে আসেন।
পরে জানে আলম অপু তাকে জানান, ওই বাসা থেকে শাম্মির একটি এয়ারপড নিয়ে এসেছেন। সেটি ফেরত দিতে সকাল ১০টার দিকে তারা আবার বাসায় যান। এ সময় অপু বাসায় ঢুকে শাম্মির স্বামীকে বলেন, “শাম্মি বাসায় আছেন, আমরা তাকে পুলিশে দেব।” তখন ভয় পেয়ে শাম্মির স্বামী টাকা অফার করেন। অপু ৫০ লাখ টাকা দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত ১০ লাখ টাকা নিয়ে চলে আসেন তারা। পরে টাকা সমানভাবে ভাগ করে নেওয়া হয়।
ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে রিয়াদসহ আরও তিন আসামিকে আদালতে হাজির করে তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানায় পুলিশ। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমান সেই আবেদন মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওই তিনজন হলেন: ইব্রাহিম হোসেন, সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব—তারা সবাই ছাত্রসংগঠনগুলোর সাবেক নেতা।
এর আগে ২ আগস্ট আরেক আসামি জানে আলম অপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া গত ২৭ জুলাই তাদের প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেওয়া হয়। একই দিনে আইনের সংঘাতে জড়িত কিশোর আমিনুল ইসলামকে গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
চাঁদাবাজির ঘটনায় গুলশান থানায় মামলা দায়ের করা হয় ২৬ জুলাই রাতে, বাদী হিসেবে নাম রয়েছেন সিদ্দিক আবু জাফর। এজাহারে বলা হয়, ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় রিয়াদ ও অপু শাম্মির বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। হুমকির মুখে ১০ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন বাদী। এরপর ২৬ জুলাই আবারো টাকা আদায়ের চেষ্টা করলে পুলিশ পাঁচজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। অভিযুক্তদের একজন, কাজী গৌরব অপু, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।