
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নতুন অগ্রগতি এসেছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রাথমিক তালিকায় থাকা ১৩টি দলের প্রতিনিধিদের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে এ শুনানি নেন ইসির অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ২২টি দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হলেও সেদিন উপস্থিত হয় মাত্র ১৩টি দল। বাকি দলগুলোকে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) হাজির হতে বলা হয়েছে।
শুনানিতে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে ছিল—বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), আম জনতার দল, নতুন বাংলাদেশ পার্টি (এনবিপি), বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জাতীয় জনতা পার্টি (ওসমানী), মৌলিক বাংলা, জনতার দল, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, জাসদ (শাহজাহান সিরাজ), ফরওয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি।
এর আগে ইসি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহ্বান করলে ১৪৩টি রাজনৈতিক দল আবেদন জমা দেয়। প্রথম দফায় শর্ত পূরণ না করায় সব দলকেই ঘাটতি পূরণের সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ৮৪টি দল সাড়া দিলেও বাকি দলগুলো তা করেনি। শেষ পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ের তদন্ত শেষে ২২টি দলকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়।
তদন্ত সম্পন্ন হওয়া দলগুলোর মধ্যে রয়েছে—ফরওয়ার্ড পার্টি, আম জনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, মৌলিক বাংলা, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ ন্যাশনাল লীগ, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সলুশন পার্টি, নতুন বাংলাদেশ পার্টি ও অন্যান্য কয়েকটি দল।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, মাঠ পর্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনের হাতে এসেছে এবং চলতি মাসেই নিবন্ধন চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধনের জন্য কোনো রাজনৈতিক দলের একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলা কমিটি, ১০০ উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হবে। এছাড়া কোনো দলের প্রার্থী সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলে বা পূর্ববর্তী নির্বাচনে পাঁচ শতাংশ ভোট পেলে সেই দলও নিবন্ধনের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।
বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি। ২০০৮ সালে এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মোট ৫৫টি দল নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে পাঁচটির নিবন্ধন বাতিল হয়। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপার নিবন্ধন ফিরিয়ে আনা হলেও ইসি এখন পর্যন্ত কেবল জামায়াতের নিবন্ধন স্বীকৃতি দিয়েছে।