নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা জাতির জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে উঠবে: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আমরা এখন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা জাতির জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে।”

বুধবার (১২ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কানাডার সাত সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন সিনেটর সালমা আতাউল্লাহজান।

সাক্ষাৎকালে দুইপক্ষ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা প্রতিনিধিদলকে দেশের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া ও আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করেন।

ড. ইউনূস বলেন, “আপনারা এমন এক সময় বাংলাদেশে এসেছেন, যখন দেশটি এক ঐতিহাসিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে—একটি তরুণ নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের ফলাফল হিসেবে। এখন আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে উঠবে।”

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আট বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনই একমাত্র টেকসই সমাধান। প্রায় ১২ লাখ মানুষ বাংলাদেশে বসবাস করছে, হাজার হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে—কিন্তু তারা জানে না তাদের নাগরিকত্ব বা ভবিষ্যৎ কী। আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।”

সিনেটর সালমা আতাউল্লাহজান কানাডার রোহিঙ্গা ইস্যুতে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা বলছি। এটি একটি গুরুতর মানবিক উদ্বেগের বিষয়। বিশ্বের উচিত তাদের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগী হওয়া।”

প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংসদ সদস্য সালমা জাহিদ (স্কারবোরো সেন্টার–ডন ভ্যালি ইস্ট, লিবারেল), সামির জুবেরি—বৈচিত্র্য, অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক মন্ত্রীর সংসদীয় সচিব এবং পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য; মাহমুদা খান (এইচসিআই-এর গ্লোবাল সিইও); মাসুম মাহবুব (এইচসিইউএসএ-এর সিইও); আহমদ আতিয়া (জেস্টাল্ট কমিউনিকেশনের সিইও) এবং উসামা খান (ইসলামিক রিলিফ কানাডার সিইও)।

সামির জুবেরি বলেন, “কানাডা বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বহুমুখী করতে কাজ করছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি এশিয়া সফরে গিয়ে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্য আনার লক্ষ্যে উদ্যোগ নিয়েছেন।”

উভয়পক্ষ পোশাক, কৃষি ও অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতে বাণিজ্য সুযোগ এবং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান রপ্তানি শিল্পে কানাডার বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

সাক্ষাতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।