
দলীয় সমীকরণ বদলালেও নির্বাচনী মাঠ ছাড়তে নারাজ বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট তাদের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দিয়েছে। এই আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন জমিয়তের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। মনোনয়ন না মিললেও তিনি নির্বাচনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জানা গেছে, আগামীকাল বুধবার ২৪ ডিসেম্বর তার কর্মী সমর্থকেরা তার পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবেন।
এই আসনকে ঘিরে রুমিন ফারহানার মনোনয়ন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছিল। গত ৩ নভেম্বর বিএনপি ২৩৭টি আসনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে কাউকে ঘোষণা করেনি। এরপর স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ধারণা তৈরি হয় যে আসনটি জোটের প্রার্থী মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। তবুও রুমিন ফারহানা তার নির্বাচনী তৎপরতা বন্ধ করেননি। বিভিন্ন সভা ও সমাবেশে তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন।
মনোনয়ন না পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় রুমিন ফারহানা বলেন, “ইনশাল্লাহ সবার দোয়ায় আমি নির্বাচন করব। আগামীকাল মনোনয়ন ফরম কিনব। এতো বড় দল (বিএনপি) তাদের নিজস্ব ভালো-মন্দ বুঝতে হয়। যেহেতু জমিয়তে উলামায়ের সঙ্গে তারা জোট করেছে, আসন না দিলে কেমন করে জোট হবে। দল বাধ্য হয়ে আসন দিয়েছে।”
স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করলে দলীয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “যদি ব্যবস্থা নিতে হয় ওনারা নিশ্চই নেবেন৷ আমি তো আসলে বাধা দিতে পারব না।”
এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর তপু বলেন, “আমরা বিএনপি পরিবার দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করবো। দলের বাইরে আমরা কেউ যাব না। দলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা এবং বিজয়নগর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে রুমিন ফারহানাসহ অন্তত ছয়জন নেতা বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক কয়েকটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই তাদের শরিক দলগুলোর জন্য আসনটি ছেড়ে দেওয়ার নজির রেখেছে।
বর্তমানে এই আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব নির্বাচনী মাঠে সক্রিয়। তার পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আমির মোবারক হোসাইন আকন্দ এবং জাতীয় পার্টির সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য ও সদ্য জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন পাওয়া অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের অংশগ্রহণে আসনটি অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, বর্তমান সীমানা অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি সরাইল, আশুগঞ্জ ও বিজয়নগর উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৪৪৮ জন।