
ভারত ও পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি আবারও উল্লেখ করেছেন তিনি।
সোমবার (১৮ আগস্ট) এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, রোববার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুবিও এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন, কারণ এটি খুব সহজেই ভেঙে যেতে পারে। “যুদ্ধবিরতির জটিলতার একটি দিক হলো এটি ধরে রাখা, যা খুবই কঠিন। প্রতিদিন আমরা লক্ষ্য রাখি পাকিস্তান ও ভারতে কী ঘটছে,” বলেন তিনি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে রুবিও বলেন, “যুদ্ধবিরতি কেবল তখনই সম্ভব যখন উভয় পক্ষ গুলি চালানো বন্ধে সম্মত হয়। আর রাশিয়ানরা এখনো তাতে রাজি হয়নি।” তিনি আরও যোগ করেন, “যুদ্ধবিরতি দ্রুত ভেঙে যেতে পারে, বিশেষ করে যখন যুদ্ধ চলছে সাড়ে তিন বছর ধরে (ইউক্রেনে)। তবে আমি মনে করি না কেউ এই লক্ষ্যে দ্বিমত করবে না যে কেবল যুদ্ধবিরতি নয়, স্থায়ী শান্তি চুক্তি দরকার— যাতে এখন যুদ্ধ না থাকে, ভবিষ্যতেও না থাকে।”
ফক্স বিজনেসকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে রুবিও আবারও ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। ট্রাম্পের দাবি ছিল, তিনি এই সংঘাতের সমাধানে সহায়তা করেছেন।
রুবিও বলেন, “আমরা সৌভাগ্যবান ও কৃতজ্ঞ যে আমাদের একজন প্রেসিডেন্ট আছেন, যিনি শান্তি প্রতিষ্ঠাকে তার প্রশাসনের অগ্রাধিকারে রেখেছেন। আমরা সেটা দেখেছি কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডে, ভারত-পাকিস্তানে, রুয়ান্ডা ও কঙ্গোতে। এবং আমরা বিশ্বজুড়ে শান্তি আনার যেকোনো সুযোগ অনুসরণ করে যাব।”
গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চার দিনের পাল্টাপাল্টি ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হন এবং হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। এরপর দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এটি ছিল তিন দশকের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত।
পাকিস্তানের দাবি, তারা অন্তত পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল জেট ছিল। এই লড়াইয়ে অংশ নেয় প্রায় ৩০টি পাকিস্তানি ও ৭০টি ভারতীয় বিমান। প্রথমে ভারত বিমান হারানোর বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করে যে পাকিস্তান কিছু যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
ট্রাম্প এ সংঘাতে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর ক্ষেত্রে নিজের ভূমিকার কথা বারবার বলেছেন এবং দুই দেশের নেতাদের প্রশংসা করেছেন। তবে নয়াদিল্লি তার ভূমিকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। অন্যদিকে ইসলামাবাদ ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দিয়ে তাকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে।