
স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেতে এবার আরও কঠিন শর্তের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন যুক্তরাজ্যে থাকা অভিবাসীরা। ব্রিটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে যারা ‘পার্মানেন্ট রেসিডেন্স’ বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করবেন, তাদের অবশ্যই ব্যাখ্যা করতে হবে; তারা কীভাবে ব্রিটিশ সমাজের জন্য ‘মূল্যবান’।
বিষয়টি প্রথম জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স, যারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছে। শিগগিরই নতুন এই নীতির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ।
ব্রিটেন গত ১৫ বছর ধরেই অভিবাসন নিয়ে চাপের মুখে রয়েছে। ২০০৯ সালে কনজারভেটিভ পার্টি এই সংকট সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও, দেড় দশকেও সেভাবে কোনো কার্যকর পরিবর্তন আনতে পারেনি। এর ফলেই ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে দলটি বড় ধরনের পরাজয়ের মুখে পড়ে এবং ক্ষমতায় আসে লেবার পার্টি।
তবে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এক বছর পেরিয়ে গেলেও অনিয়মিত অভিবাসন পরিস্থিতির উন্নয়নে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। এরই মধ্যে ‘রিফর্ম ইউকে’ নামের একটি ডানপন্থী রাজনৈতিক দল এই ইস্যু ঘিরে সরকারের প্রতি তীব্র সমালোচনা শুরু করেছে এবং দিন দিন জনসমর্থন বাড়াচ্ছে। তাদের দাবিকেই গুরুত্ব দিয়ে লেবার সরকার এই নতুন কড়াকড়ির পথে হাঁটছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
বর্তমানে প্রচলিত নিয়মে, যুক্তরাজ্যে অভিবাসীরা টানা পাঁচ বছর বৈধভাবে বসবাসের পর স্থায়ী নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে নতুন নিয়ম চালু হলে, আবেদনকারীদের শুধু দীর্ঘমেয়াদি বসবাস করলেই হবে না; তার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার প্রমাণও।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আবেদনের সময় ইংরেজি ভাষায় উন্নত দক্ষতা এবং স্থানীয় কমিউনিটিতে স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে যুক্ত থাকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। এই দুটি শর্ত পূরণ করলেই স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি মিলবে।
যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতিতে এমন পরিবর্তন দীর্ঘদিনের চাপ, রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
সূত্র: রয়টার্স